মো. এনামুল হক, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে কলেজছাত্রী সুলতানা আক্তার রত্না (২০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই। প্রেমিক মহাদেব রায় (২২)কে গ্রেপ্তার করার পর তিনি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাতে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে। পুলিশ জানায়, প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে নিয়ে বিরোধের জেরেই এই নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
গত বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে দেবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাঝাপাড়া এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে রত্নার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দিলে, দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করে।
পুলিশ জানায়, মরদেহ উদ্ধারের সময় রত্নার গলায় শ্বাসরোধের দাগ ছিল। তার হাতে মোবাইল ফোনের কাভার এবং একটি কাপড়ের ব্যাগ পাওয়া যায়।
ঘটনার তদন্তে রত্নার ঘর থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়, যাতে প্রেমিক মহাদেব রায়ের সঙ্গে তার সম্পর্কের কথা লেখা ছিল এবং তার সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত ছিল।
পুলিশ সুলতানার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল নম্বরের কল ডিটেইল রেকর্ড (সিডিআর) বিশ্লেষণ করে সন্দেহভাজনদের শনাক্ত করে এবং বুধবার দুপুরে পুণ্ডিপাড়া গ্রামের খোকা বর্মনের ছেলে মহাদেব রায়কে হেফাজতে নেয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মহাদেব রায় জানান, রত্না দীর্ঘদিন ধরে তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু তার পরিবার অন্যত্র মহাদেবের বিয়ে ঠিক করে ফেললে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়।
ঘটনার রাতে রত্নাকে বাইরে ডেকে নিয়ে বিয়ের বিষয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়ে মহাদেব। একপর্যায়ে ওড়না দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে এবং রত্নার মোবাইল ফোন ভেঙে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেয়।
দেবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) প্রবীর কুমার সরকার বলেন, “প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে নিয়ে বিরোধের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।”
দেবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সামুয়েল সাংমা বলেন, “অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে অল্প সময়ের মধ্যেই মামলার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে।”
নিহত রত্নার বাবা রবিউল ইসলাম বুধবার রাতে মহাদেব রায়সহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দেবীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার সকালে মহাদেবকে আদালতে সোপর্দ করলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।