মো.এনামুল হক, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি
পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার আজিজনগর গ্রামের মাহমুদুল ইসলাম মামুন এবার অর্জন করেছেন ২০২৪ সালের জাতীয় পরিবেশ পদক। এক সময় যাকে অনেকেই ‘পাগল’ বলে সম্বোধন করতেন, সেই মামুন আজ সমাজ ও পরিবেশ সচেতনতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।
ছোটবেলা থেকেই প্রকৃতি ও মানুষের জন্য কিছু করার অদম্য ইচ্ছাশক্তি থেকেই তার যাত্রা শুরু। রাস্তার ধারে পড়ে থাকা পলিথিন কুড়িয়ে সেগুলোতে মাটি, সার ও বীজ দিয়ে তৈরি করতেন গাছের চারা। নিজের পুরনো সাইকেল চালিয়ে সেই চারা আর বই পৌঁছে দিতেন শিশুদের হাতে। চালাতেন ছোট পাঠশালা, সচেতন করতেন মানুষকে পরিবেশ রক্ষায়।
রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে বাংলা বিষয়ে মাস্টার্স পাস করেও মামুন বেছে নেন সাদামাটা জীবন। খাসি পালন করে, বই ও গাছ তৈরি করে তিনি চালিয়ে গেছেন তার পরিবেশ রক্ষা ও শিক্ষাব্যবস্থায় অবদান রাখার অসাধারণ কাজ।
মামুনের এই অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তাকে প্রদান করা হয় ২০২৪ সালের জাতীয় পরিবেশ পদক। তার এই অর্জনে খুশি ও গর্বিত তার মা মাহমুদা বেগম, যিনি এক সময় ছেলের কর্মকাণ্ডে আপত্তি করলেও এখন তার পাশে রয়েছেন দৃঢ়ভাবে।
পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী মামুনের কাজকে অনুকরণীয় উল্লেখ করে তাকে একটি বাইসাইকেল উপহার ও সংবর্ধনা প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ এবং জেলা জামায়াতের আমির মো. ইকবাল হোসেন।
স্থানীয়রা জানান, মামুন গাছ দেন, বই দেন, ছোটদের পড়ান—তিনি একজন সত্যিকারের সমাজসেবক। তার আগমনে শিশুরা খুশিতে চিৎকার করে উঠে, “মামুন ভাই আসছে!”
দীর্ঘ দুই দশক ধরে সমাজ ও পরিবেশের জন্য কাজ করে যাওয়া মামুন আজ পঞ্চগড়ের গর্ব, এবং তার এই স্বীকৃতি অনেক তরুণকে অনুপ্রাণিত করছে একই পথে হাঁটার জন্য।