মোঃ ইব্রাহীম মিঞা, বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার চরকাই রেঞ্জে সামাজিক বনায়ন প্রকল্পের উপকারভোগীদের টাকা থেকে ৮ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, কথিত এনজিও কর্মী এনামুল হক, অবসরপ্রাপ্ত মালী আয়েন উদ্দিন ও বর্তমান সদর বিট কর্মকর্তা মো. সুলতান হোসেনের যোগসাজশে এ দুর্নীতি সংঘটিত হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড়বাইলশিরা গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে এনামুল হক নিজেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া এনজিও পল্লীবন্ধু পরিষদ এর নির্বাহী পরিচালক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন দপ্তর থেকে বিশেষ সুবিধা আদায় করছেন। বিশেষ করে বন বিভাগের সামাজিক বনায়ন প্রকল্প থেকে তিনি লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, চরকাই রেঞ্জের বিভিন্ন সড়কে সৃজিত বাগানে নাম অন্তর্ভুক্তির কথা বলে এনামুল হক ও আয়েন উদ্দিন শত শত সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ২–৩ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। এমনকি প্রায় দুই বছর আগে রাস্তার ধারে সৃজিত বাগানের গাছ বিক্রির অর্থ বিতরণের সময় উপকারভোগীদের চেক বইয়ে অগ্রিম ব্লাইন্ড স্বাক্ষর নেওয়া হয়। প্রতিজন মেইন ডিড ওয়ালাদের নিকট থেকে ৪০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও ১৫ হাজার টাকা কেটে মাত্র ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ১৫ জন মেইন ডিড ওয়ালাদের কাছে থেকে ৫৮ হাজার টাকার মধ্যে ২৮ হাজার টাকা কেটে নিয়ে ৩০ হাজার টাকা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, যারা টাকা দিতে রাজি হননি, প্রায় ৪০ জন উপকারভোগীর নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্তই করা হয়নি। ফলে ৭৯ জন উপকারভোগীর কাছ থেকে মোটামুটি ৮ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তাদের দাবি।
বড়বাইলশিরা গ্রামের সাইদুল মাস্টার বলেন, “অগ্রিম টাকা না দেওয়ায় আমাদের অনেকের নামই বাদ দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিট কর্মকর্তা সুলতান হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমি কাউকে টাকা দিতে বলিনি, সাবডিড বলে কিছু নেই।” তবে স্থানীয়রা দাবি করেছেন, বন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত করলে এ বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।