রাসেল আহমেদ, খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার তেরখাদা উপজেলার সরকারি ইখড়ি কাটেংগা হাই স্কুল মাঠে রবিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় এক যুব সমাবেশ, যেখানে ‘যুব সমাজের অঙ্গীকার, ফেরাতে হবে ভোটের অধিকার’—এই শ্লোগানকে কেন্দ্র করে জমে ওঠে রাজনৈতিক প্রাণচাঞ্চল্য। সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, দেশের তারুণ্যই আজ সবচেয়ে বড় শক্তি। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যেভাবে দেশের মানুষকে আত্মমর্যাদার পথে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন, আজ তার উত্তরসূরিরা সে পথেই হেঁটে নতুন প্রজন্মকে নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে নেমেছে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আজ বন্দী, কারণ তিনি সত্য উচ্চারণের সাহস দেখিয়েছেন। তারেক রহমান তরুণদের জাগিয়ে তুলেছেন একটি গণতান্ত্রিক ও জনগণের রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে। তাঁর ঘোষিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দলীয় কৌশল নয়, বরং একটি জাতীয় মুক্তির রূপরেখা।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতা নয়, চায় মানুষের অধিকার। ভোটের অধিকার, বিচার পাওয়ার অধিকার, কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে আনতেই আজকের এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। তরুণরাই আগামী দিনের রাষ্ট্রের স্থপতি হবে, সেই বিশ্বাসেই বিএনপি তার পথ এগিয়ে নিচ্ছে।
সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। তিনি বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করে। জনগণের ওপর আস্থা রেখেই দলটি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আবারও জনগণের রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তেরখাদা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোল্লা হুমায়ুন কবির।
সমাবেশে বিশেষ বক্তা ছিলেন খুলনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক এবাদুল হক রুবায়েদ এবং সদস্য সচিব নাঈমুজ্জামান জনি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ মনিরুজ্জামান মন্টু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলাম, তেরখাদা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চৌধুরী কওসার আলী এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান রুনু।
সমাবেশে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক চৌধুরী ফখরুল ইসলাম বুলু, সাবেক সদস্য সচিব এফ এম হাবিবুর রহমান, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি উজ্জ্বল কুমার সাহা, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সেতারা সুলতানা, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ শেখ, বিএনপি নেতা ইকরাম হোসেন জমাদ্দার, মোল্লা মাহবুবুর রহমান, সরদার আব্দুল মান্নান, সাজ্জাদ হোসেন নান্টা, শরীফ নাঈমুল হক, মিল্টান মুন্সি, আজিবার শেখ, এস.কে. নাসির আহমেদ, কামরুল মোল্লা, যুবদল নেতা গোলাম মোস্তফা ভুট্টো, অহিদ শেখ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা সোহাগ মুন্সি, শামীম আহমেদ রমিজ, কৃষক দল নেতা রাজু চৌধুরী, সাবু মোল্লা এবং ছাত্রদল নেতা সাব্বির আহমেদ টগর।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন যুব নেতা রাজু বিল্লাহ।
বক্তারা তাঁদের বক্তব্যে দলীয় ঐক্য, আন্দোলনের গতি বাড়ানো এবং তৃণমূলের মধ্যে তারেক রহমানের রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি পৌঁছে দেওয়ার ওপর জোর দেন। একইসাথে তাঁরা বর্তমান সরকারের ‘দমন-পীড়নের’ বিরুদ্ধে আইনি, সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা একত্রে শপথ নেন—দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার এবং একটি জনবান্ধব, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে তারা রাজপথে থেকে আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন।