জয়পুরহাট প্রতিনিধি
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় কবিরাজি চিকিৎসার কথা বলে এক তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষকের বিরুদ্ধে। শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে ওই তরুণীর বাড়িতে প্রবেশ করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দেড় লাখ টাকায় বিষয়টি মীমাংসা করা হয় বলে জানা গেছে। ঘটনাটি উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের এলতা গ্রামে ঘটে।
স্থানীয় সূত্র ও তরুণীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক মাওলানা এমরান হোসেন চাকরির পাশাপাশি কালাই উপজেলার এলতা পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। পাশাপাশি তিনি কবিরাজি চিকিৎসাও করে থাকেন।
মেয়েলি সমস্যার কারণে ওই তরুণী চিকিৎসার জন্য ইমাম এমরান হোসেনের শরণাপন্ন হন। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইমাম এমরান হোসেনের সঙ্গে তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই সময়কার কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও তিনি মোবাইল ফোনে ধারণ করেন বলেও জানা গেছে।
সম্প্রতি তরুণী বিয়ের দাবি করলে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এরপর শুক্রবার বিকেলে উপজেলার মোলামগাড়ীহাট এলাকায় দেখা হলে এমরান হোসেন তরুণীকে জোরপূর্বক সিএনজিতে ওঠাতে চাইলে স্থানীয়রা বাধা দেয়। পরে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, রাজি না হলে ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এতে ভীত হয়ে তরুণী বিষয়টি পরিবারকে জানান।
শনিবার দুপুরে এমরান হোসেন আবার ওই তরুণীর বাড়িতে প্রবেশ করলে স্থানীয়রা তাকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন। পরে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে দেড় লাখ টাকা দিয়ে ঘটনাটি আপোষ মীমাংসা করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তরুণীর মামা রুবেল হোসেন বলেন, “আমার ভাগ্নী ছোটবেলা থেকে অসুস্থ। চিকিৎসার জন্য ওই হুজুরের কাছে যেত। আমরা বুঝতেই পারিনি, তিনি এমন কাজ করবেন। আজকে হুজুর বাড়িতে এলে স্থানীয়রা তাদের আটক করে। পরে গ্রামের সবাই মিলে দেড় লাখ টাকায় মীমাংসা করে।”
অভিযুক্ত প্রভাষক মাওলানা এমরান হোসেন বলেন, “আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম, এটা সত্য; তবে কোনো খারাপ কাজ করিনি।”
স্থানীয় বিএনপি নেতা মুকুল হোসেন বলেন, “ঘটনার পর সেখানে গিয়ে দেখি, দেড় লাখ টাকায় তারা বিষয়টি আপোষ করেছে।”
কালাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয়ভাবে সমাধান হয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”