মোঃ ইব্রাহীম মিঞা,দিনাজপুর প্রতিনিধি
দীর্ঘ দুই বছর পর প্রাণ ফিরে পেয়েছে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার নট কুমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠ। “ক্রীড়াই শক্তি, ক্রীড়াই বল” — এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নট কুমারী যুব কল্যাণ সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত “ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫”-এ অংশ নেন আটটি দল।
খেলাকে কেন্দ্র করে এলাকাজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। সকাল থেকেই মাঠে ভিড় জমে শিশু-কিশোর ও তরুণদের। দীর্ঘদিন পর গ্রামীণ খেলাধুলা ফিরে আসায় এলাকাবাসীর মুখে আনন্দের ঝিলিক।
টুর্নামেন্টের সভাপতিত্ব করেন মোঃ কামাল হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খানপুর ইউনিয়নের পোড়াগ্রাম বিট কর্মকর্তা আইয়ুব আলী, সাপ্তাহিক বিরামপুর বার্তা-এর সম্পাদক(ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল কুদ্দুস, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম, সহকারী শিক্ষক শাহজামাল ও আব্দুল করিম, এবং সুমাইয়া ডেন্টাল কেয়ার-এর স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহিম প্রমুখ।
খয়বার একাদশ, পোড়াগ্রাম একাদশ, আব্দুল খালেক শরিয়তপুরী একাদশ, সোনাঝুরি একাদশ, ভাই ভাই একাদশ (রতনপুর), সুটিবাড়ি রংপুর একাদশ, পত্নীচান একাদশ ও অম্রবাড়ি একাদশ — মোট আটটি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
বিজয়ী দলের জন্য নির্ধারিত হয়েছে ৮৫০০ টাকা এবং রানার্সআপ দলের জন্য ৬৫০০ টাকার প্রাইজমানি।
উদ্বোধনী খেলায় মুখোমুখি হয় আব্দুল খালেক শরিয়তপুরী একাদশ ও সুটিবাড়ি একাদশ।
খেলার উদ্বোধন করা হয় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে, যা স্থানীয়দের কাছে এক অনন্য দৃশ্য হিসেবে প্রশংসিত হয়।
তবে এই আনন্দের মধ্যেও উঠে এসেছে কিছু অসন্তোষের খবর। বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে পাঠদান বন্ধ রেখে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ মাঠে অবস্থান করেন, এমনকি বিদ্যালয়ের বেঞ্চসহ আসবাবপত্র মাঠে ব্যবহার করা হয়।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণের ভেতরে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের দোকান বসানো হয় এবং পানির চাহিদা মেটানো হয় বিদ্যালয়ের অভ্যন্তর থেকে। উচ্চস্বরে ধারাভাষ্য ও ভিড়ের কারণে ক্লাস পরিচালনা পুরোপুরি ব্যাহত হয় বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেন।
শিক্ষাপ্রেমীরা মনে করেন, খেলাধুলা তরুণ সমাজের জন্য ইতিবাচক হলেও বিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পাঠদানকে ব্যাহত করে এমন আয়োজন দায়িত্বশীলতার প্রশ্ন তোলে।
এলাকাবাসীর একাংশ বলেন,দুই বছর পর মাঠে খেলা ফিরেছে, এটা সত্যিই আনন্দের। কিন্তু স্কুল চলাকালীন সময়ের মধ্যে আয়োজনটা করা ঠিক হয়নি।
অন্যদিকে আয়োজকরা জানান, এটি সম্পূর্ণ সামাজিক উদ্যোগ, তরুণদের মাঠে ফিরিয়ে আনার প্রয়াস। ভবিষ্যতে সময় ও স্থানের দিকটি আরও ভালোভাবে বিবেচনা করা হবে।
এবিষয়ে নটকুমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে খেলার বিষয়টি আমাকে আগে জানানো হয়নি। আমাকে আগে থেকে জানানো হলে আমি বিদ্যালয়ের সংরক্ষিত ছুটি থেকে আজকের দিনের জন্য বিদ্যালয় ছুটির জন্য আবেদন করতাম।

