কচুয়া (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
পানির তীব্র সংকটের প্রেক্ষিতে খোলা পুকুরের পানি খাওয়ানো হচ্ছে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের। ডায়রিয়া রোগীসহ অন্যান্য রোগীরা পানি সংকটে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। হাসপাতালে কো মেডিক্যাল টেকনোলজিষ্ট ল্যাব না থাকায় কোন রোগীর ল্যাব টেষ্ট হচ্ছে না। এনালক এক্সরে মেশিন নিজেই অসুস্থ্য। এছাড়া, পুরাতন পরিত্যক্ত ভবনে মারাত্মক ঝুঁকিতে চলছে চিকিৎসা। নতুন ভবনেও দেখা দিয়েছে ফাটল! এমন হাজারো সমস্যার মধ্যে কচুয়া হাসপাতাল নিজেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। এমন মারাত্মক সমস্যা সমাধানের জন্য সরকারের উর্ধতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কচুয়া উপজেলার এক লাখ ১৩ হাজার জন সংখ্যার ৮২% মানুষ করোনার ১ ডোজ টিকা গ্রহণ করেছেন। লক্ষাধিক জনগণের স্বাস্থ্যসেবার জন্য ২৯ জন ডাক্তারের স্থলে টিএইচএ এবং আরএমও সহ মাত্র ১১ জন রয়েছেন। তাদের মধ্য হতে ডা. আল মাসুদ ডেপুটেশনে বাগেরহাট আছেন। ডা. মুনতাহার তাবাসসুম মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন। ডা. দেবরাজ অর্জিত ছুটিতে আছেন। আরো বহুবিধ সমস্যা নিয়ে প্রায় অচলাবস্থায় রয়েছে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
এদিকে, বিগত ১৯ এপ্রিল, ২০২০ সালে কচুয়া হাসপাতালের পুরাতন ভবনটির ছাঁদ ভেঙ্গে ঘুমন্ত এক বৃদ্ধ রোগী আহত হন। তারপর স্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী (এইচইডি) মোঃ এনামুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ৩১ শয্যার পুরাতন ভবনটির পুরুষ ওয়র্ঢি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেন। তারপরেও সেই ভবনে বসে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। মাঠকর্মী ২৫ জনের জায়গায় রয়েছে ১৫ জন। স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদ দুটি শূণ্য রয়েছে। সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা স্বাস্থ্য পরিদর্শকের কাজটি করেন। সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৫ জনের জায়গায় ৪জন আছে। ল্যাব টেকনোলজিষ্টের তিনটি পদের সবগুলোই খালি থাকায় রোগীরা কোন সেবা পাচ্ছে না। কোন স্টোর কিপার নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোগীরা বলেন, ‘বাঁচার আশায় হাসপাতালে আইসে তো এহন মরার জো হইছে। হাসপাতালে আইসে দেহি হাসপাতাল নিজেই অসুস্থ্য। তবু ভয়ে ভয়ে থাকতি হচ্ছে। না জানি কহন পুরো ভবন ভাইঙ্গে মাথার উপর পড়ে!’ হাসপাতালের পুরাতন পরিত্যক্ত ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পেলেস্টার খসে খসে পড়ছে বলে তারা জানান। হাসপাতালের সামনের পুকুর হতে পাইপের মাধ্যমে ফিল্টার বিহীন ভাবে পানি দেয়া হচ্ছে। তাও থাকে একবেলা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্তমান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নিয়াজ মোস্তাফি চৌধুরী নবধারা কে বলেন, ‘জায়গার সংকুলান ব্যবস্থা না থাকায় পুরাতন মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই সেবা দেয়া হচ্ছে। ভবনের সমস্যার বিষয়াদি স্বাস্থ্য প্রকৌশলী বিভাগে একাধিকবার চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। প্রতিদিন ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে পানির সংকট মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করেছে। আগে ওয়ার্ল্ড ভিষন নামে একটি এনজিও ১টি পানির ফিল্টার সরবরাহ করেছিল । বর্তমানে তার ব্যাটারী চুরি হয়ে যাওয়ার পর সেটি তারা আর সংস্কার না করার ফলে সমস্যা হচ্ছে। পুকুুর হতে সাপ্লাইয়ের পানির ব্যবস্থা আছে। ডায়রিয়া মোকাবেলার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।