গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ০৮ নং মহারাজপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. সালাউদ্দিন মিয়া ধরাকে সরা জ্ঞান করে সীমাহীন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা ও মালামাল আত্মসাতের বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিন মিয়া নির্বাচিত ইউপি সদস্যদের পাশ কাটিয়ে, তাদের সাথে কোনো বিষয়েই কোনো রকম আলাপ-আলোচনা কিংবা মত বিনিময় না করে সম্পূর্ণ নিজের মতো করে সচিব, প্যানেল চেয়ারম্যান (০১) মো. বাইজিদ মোল্যা এবং পরিষদের উদ্যোক্তা মো. রাকিব শেখ’র সমন্বয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে পরিষদ পরিচালনা করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার এই তুঘলকি কান্ডে অতিষ্ট হয়ে মো. রফিকুল ইসলাম (৮নং ওয়ার্ড), মো. মজিবর রহমান (৬নং ওয়ার্ড), মো. সাদেকর রহমান (৪নং ওয়ার্ড), মো. ইমান আলী (৩নং ওয়ার্ড), মো. কবির মোল্যা (১নং ওয়ার্ড), মো. জাহিদুল ইসলাম (২নং ওয়ার্ড), আঃ মান্নান খান (৯নং ওয়ার্ড) এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রেহানা আক্তার (১,২ ও ৩নং ওয়ার্ড) ও মোসাঃ হেনা বেগমসহ (৭,৮ ও ৯নং ওয়ার্ড) মোট ৯ জন ইউপি সদস্য স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগপত্র গত ১৬ এপ্রিল, রবিবার জেলা প্রশাসক বরাবর দাখিল করেন। একই সময় সংসদ সদস্য গোপালগঞ্জ-০১, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মুকসুদপুর এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে অনুলিপি প্রেরণ করা হয়। ইউপি সদস্যদের এই অভিযোগ পত্রে উল্লেখিত ১৭ টি বিষয়ে চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের সেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা ও লাগামহীন দুর্নীতির চিত্র ফুটে উঠেছে।
অভিযোগে বলা হয়, ভূমি হস্তান্তরের ০১% বরাদ্দের টাকা আত্মসাত করা হয়। টিয়ার, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি, টিসিবি, ভিজিডি, কৃষি বীজ-সার এর বিষয়গুলো নিয়ে পরিষদে কোনো প্রকার মিটিং বা আলাপ-আলোচনা ছাড়াই সিন্ডিকেটের খেয়াল-খুশি মত বন্টন করা হয়। মহারাজপুর ইউনিয়নের সকল হাট-বাজারের ট্রেড লাইসেন্স বাবদ উত্তোলনকৃত টাকা এবং বিভিন্ন ধার্যকৃত সরকারি ট্যাক্সের টাকা আত্মসাত করা হয়। গর্ভবতী ভাতা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতায় নাম পূণঃস্থাপন বাবদ অনলাইনের কথা বলে উদ্যোক্তার মাধ্যমে জন প্রতি ৫ শ থেকে ১ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। এছাড়ও গাছ কাটা, মাটি কাটা, গভীর নলকুপ, সেনিট্রেশন ল্যাট্রিন প্রকল্প ও ডানিডা প্রজেক্টসহ বিভিন্ন খাতে অর্থ আত্মসাত ও দুর্নীতির চিত্র বিদ্যমান রয়েছে। জন্মনিবন্ধন ও মৃত্যু সনদের বেলায় চাহিদা মাফিক টাকা না দিলে উদ্যেক্তা মো. রাকিব শেখ ইউপি সদস্যদের সাথেও অসদাচরন করেন বলে অভিযোগ করেন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রেহানা আক্তার। তিনি আরও বলেন, চেয়ারম্যানের ডান হাত হিসেবে পরিচিত রাকিব শেখ ইউপি সদস্যদের সাথে ধমকের সুরে কথা বলেন। এ অভিযোগ অস্বীকার করে রাকিব শেখ বলেন, তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
অভিযোগের বিষয় চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, একটি স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের বিষয়ে সুবিধা করতে না পেরে, আমার ভালো কাজকে মেনে নিতে না পেরে এগুলো করে বেড়াচ্ছে। আমি দ্বিতীয়বার নির্বাচিত চেয়ারম্যান। জনমনে আমার একটি আস্থার জায়গা রয়েছে। এলাকায় রাস্তাঘাট পাকা করাসহ বহু উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছি। এসব যাদের কাছে ভালো লাগছে না, তারাই আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।