তুহিন আলম, শার্শা (যশোর) প্রতিনিধি
আসন্ন পবিত্র কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠেছে দক্ষিণ বঙ্গের সব চেয়ে বড় শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া সাতমাইল পশুহাট। কুরবানির গরু ও ছাগল কিনতে দূরদূরান্ত থেকে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে উঠে এই হাট। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকারি গরু ব্যবসায়ী গরু বেপারীরা সাত মাইল পশুরহাট থেকে পছন্দমত গরু ও ছাগল কিনে স্ব স্ব এলাকার বাজারে সরবরাহ করে থাকে।
সাতমাইল পশু হাটে গিয়ে দেখা যায়, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হাজার হাজার গরু ছাগল উঠেছে এই বাজারে। অনেক ধরনের গরু ও ছাগল সেই সাথে ক্রেতা ও বিক্রেতা। সকাল ৮টার পর থেকে বেলা ১২টা-১টার মধ্যে বাজার ভরে যায় গরু ও ছাগলে। সেই সাথে মহিষ ও ভেড়াও দেখা যায়। ঈদের বাজার ধরতে স্থানীয় ছোট ছোট খামারিরা তাদের পোষা গরু ও ছাগল বিক্রি করতে এসে অনেকে কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে অখুশি। আবার অনেকে ন্যায্য মূল্য পেয়ে বেজায় খুশি।
সরেজমিনে দেখা যায়, নানান সাইজের নানান ধরনের হাজার হাজার গরু। ক্রেতারাও তেমনি তাদের পছন্দের গরু দেখে ক্রয় করছে। অনেকে গরু পছন্দ করলেও মূল্য নিয়ে ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। যে কারণে অনেকে ছোট ছোট গরুর প্রতি বেশি ঝুঁকছে। বাজারে অনেক বড় বড় গরু উঠলেও বড় গরুর ক্রেতা কম। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফেনি থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী আমিনুর রহমান জানান, অনেক বছর ধরে এই পশু হাট থেকে গরু ক্রয় করে তার এলাকায় নিয়ে বিক্রি করে। অনেক লাভও হয় তার। এ হাটে এবার গরুর অনেক দাম হাঁকা হচ্ছে। তার জন্য গরু কেনায় সমস্যা হচ্ছে। বেপারী ও খামারিরা তাদের গরুর দাম বেশি বলায় বেচাকেনা অনেক কম। এ জন্য তিনি বেশি গরু কিনতে পারেননি বলে জানান। গরু কিনতে আসা রুদ্রপুর গ্রামের ইলিয়াস বলেন, ঈদের সময়ে একটু বেশি দাম থাকবে, সেটা আমরাও জানি। তবে তুলনামূলকভাবে এ বছর দামটা একটু বেশি। হাটে গরু বিক্রির জন্য আসা খামারিরা জানান, এ বারের কুরবানির ঈদে বড় গরু বিক্রি কম হচ্ছে। সব ক্রেতাদের ছোট গরুর প্রতি ঝোঁক বেশি। আমরা খামারিরা যারা বড় গরু লালনপালন করেছি এ ঈদে বিক্রির জন্য সে গরুগুলায় লাভের চেয়ে লস হবে বলে মনে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শার্শা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাক্তার বিনয় কৃঞ্চ মন্ডল জানান, শার্শায় মোট ১২৯৫টি ছোট বড় খামার আছে। এই খামারে কুরবানির জন্য ৪ হাজার ২টি গরু ও ১৩ হাজার ১৪০টি ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, শার্শায় কুরবানির চাহিদা পশুর সংখ্যা ১০ হাজার ১৯৫টি। তবে শার্শা উপজেলায় কুরবানির চাহিদা মেটানোর পর ৬ হাজার ১৪০টি বাড়তি থাকায় তা বাইরের এলাকায় বিক্রি করতে পারবে।
ডাক্তার বিনয় কৃঞ্চ মন্ডল বলেন, এ বছর ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ না করলে স্থানীয় খামারিরা লাভবান হবে। এজন্য সীমান্তে ঈদের সময় কড়া নজরদারির জন্য বিজিবি’র প্রতি আহ্বান জানান তিনি।