শামীম শেখ, গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী)
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদী থেকে জিহাদ সরদার (৩০) নামের এক যুবকের মাথা বিহীন অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০ টার দিকে উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের অন্তার মোড় এলাকার নদী থেকে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। জিহাদ সরদার স্হানীয় চরবরাট গ্রামের শহীদ সরদারের ছেলে। সে নারায়ণগঞ্জের একটি জাহাজ মেরামত (ডকইয়ার্ডে) কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতো।
তার এ নির্মম হত্যাকান্ডে পরিবারসহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মেঘলা আক্তার (২২) স্বামীর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন নদীতে মাথা বিহীন একটি মরদেহ নদীতে ভাসতে দেখে গোয়ালন্দ ঘাট থানাকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। এ স্বজনরা তার পরনের পোশাক দেখে মরদেহের পরিচয় সনাক্ত করেন। দুপুর ২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত লাশের মাথার সন্ধান পাওয়া যায় নি। তবে পুলিশ ও স্হানীয়রা অনুসন্ধান চালাচ্ছিল।
নিহত জিহাদ ২০১৬ সালে স্হানীয় ডাক্তার মোশারফ হোসেন হত্যা মামলার দুই নাম্বার এজাহারভুক্ত আসামি ছিল বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে।
জিহাদের ছোট বোন সামান্তা আক্তার বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে তার ভাই জিহাদ নারায়ণগঞ্জ হতে বাড়ি আসে। বিকালে বাড়ি হতে বের হয়ে অনেক রাত হয়ে গেলেও বাড়ি না আসায় আমি তাকে কয়েকবার ফোন করি। সর্বশেষ রাত ১২ টার দিকেও সে আমাকে জানায় কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরছে। এরপর আমরা তার ফোনটি বন্ধ পাই। পরদিন শুক্রবার দুপুরে পরিবারের পক্ষ হতে আমরা গোয়ালন্দ ঘাট থানার একটি নিখোঁজ ডায়েরি করি এবং সম্ভাব্য সকল জায়গায় তার খোঁজ করতে থাকি। রবিবার সকালে অন্তার মোড় এলাকার পানিতে মাথা বিহীন একটি মরদেহ ভেসে থাকার খবর পেয়ে আমরা ছুটে যাই। সেখানে আমার ভাইয়ের পরনের প্যান্ট দেখে অর্ধগলিত অবস্থায়ও আমার মা তাকে সনাক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, আমার ভাইয়ের তো কোন শত্রু ছিলোনা। কারা আমার ভাইকে এভাবে মারলো জানিনা। আমরা হত্যাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও ফাঁসি চাই।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। এরপর সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এছাড়া স্বজনরা মরদেহটি জিহাদের বলে সনাক্ত করলেও তারা শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য পিবিআইয়ের সহায়তায় কাজ করছেন। সেইসাথে এ হত্যাকান্ডের সাথে কারা জড়িত তাদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। নিহত জিহাদ ডাক্তার মোশারফ হত্যা মামলার দুই নাম্বার এজাহার ভুক্ত আসামি ছিলেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন।