নবধারা প্রতিনিধিঃ
গোপালগঞ্জের বলাকৈর গ্রামর বিল শরতের এই সময় পদ্মফুলে ছেয়ে যায়। বিল ভর্তি গোলাপি ও সাদা পদ্মের ফাঁকে ফাঁকে শাপলা ঘুরতে আসা পর্যটকদের হৃদয় জুড়িয়ে দেয়। ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকার পরেও প্রতিবছর এই ঋতুতে প্রতিদিন হাজার পর্যটক এই বিলে
পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য অবগাহন করতে আসেন।তবে বলাকৈর পদ্মবিলা ঘুরতে এসে পর্যটকেরা দিনদিন চিপস, বিস্কুট, বিরানির প্যাকেট ও পলিথিন ফেলে বিলের সৌন্দর্য নষ্ট করছেন। পরিবেশ হচ্ছ দূষিত।
গোপালগঞ্জ শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে বলাকৈর গ্রামের অবস্থান। শহর থেকে অটোরিকশাও টেম্পু করে পর্যটকরা এখানে আসেন। তারপর নৌকায় করে যান বিলের ভেতরে। পুরো গ্রামটিই একটি জলাশয়। মাঝে মাঝে ছোট বড় বাড়ির দেখা মেলে।
শরৎকালের ফুটে ওঠে সাদা ও গোলাপি পদ্ম ফুল। যা দেখতে গোপালগঞ্জ শহরসহ সারা জেলা ও আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ভিড় জমান। কেউবা আসেন
তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে বলাকৈর গ্রাম। সেইসঙ্গে স্থানীয় নৌকাচালক ও দোকানির ব্যবসা-বাণিজ্য ও জমে ওঠে।
আষাঢ় থেকে কার্তিক মাস এই এলাকায় কোন কাজ থাকে না। তখন পদ্ম ফুলই আমাদের ভরসা। আগত দর্শনার্থীদের নিয়ে নৌকায় ভ্রমন করে উপার্যন করি৷ খুশি হয়ে কেউ বাড়তি পয়সা দিলে সেটা আমাদের কাছে অনেক বড় কিছু।
পর্যটকদের বিল ঘুরিয়ে দেখানো নৌকার মাঝি হাসমত মো্ল্লা বলেন, অনেক লোক আসে প্রতিদিন এখানে।তারা চিপস এবং পলিথিন ও বিরানির প্যাকেট ফেলে পরিবেশ নষ্ট করছে, এটা ঠিক নয়। আমাদের পরিবেশ আমাদের রক্ষা করতে হবে।
স্খানীয় শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন,দীর্ঘ করোনায় সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশও বিপর্যস্ত। আর মানুষ ঘরবন্দী। সারা দেশে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমে যাওয়ায় ও লকডাউন না থাকায় সারা দেশ থেকে পদ্মফুলের এই সৌন্দর্য দেখতে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। কেউ আবার ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পদ্ম বিলের সৌন্দর্য বিমোহিত হয়ে ঘুরতে আসেন।আমাদের ভালোই লাগছে।
পদ্মবিল দেখতে আসা রত্না চৌধুরী বলেন,হিন্দুদের দুর্গা, মনসা সহ বিভিন্ন পূজায় প্রয়োজন পরে পদ্ম ফুল। তাই একশ্রেণীর গ্রামবাসী ফুল সংগ্রহ করে শহরে নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। যা তাদের উপার্জনের একটি মাধ্যম হয়ে উঠেছে।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা নবধারা কে বলেন,বলাকৈড় পদ্মবিলে জুলাই -আগষ্ট থেকে নভেম্বর- ডিসেম্বর পর্যন্ত পদ্ম ফোটে। এটি গোপালগঞ্জের একটি অন্যতম পর্যটন স্পট। বিলে পর্যটকদের যাতায়াত সহজ করার জন্য রাস্তা বড় করা হচ্ছে। পর্যটন দপ্তরকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য গেষ্ট ও রেষ্ট হাউজ তৈরীর পরিকল্পনা রয়েছে। আর দর্শনার্থীরা যেন বিলের ময়লা অবর্জনা না ফেলে সে জন্য সকলে সচেতন হতে হবে।
গোপালগঞ্জের বলাকৈড় পদ্মবিলের সৌন্দর্য শুধু এই এলাকা নয়; আসেপাশের জেলার মানুষেরও চিত্ত বিনদনের মাধ্যম হয়ে উঠছে। তবে আগতদের ফেলে যাওয়া চিফস, সিগারেটের প্যাকেট, পলিথিন বিলের পরিবেশকে দিন দিন দূষিত করে তুলছে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন দর্রশার্থীদের সচেতনতাই পারে পরিবেশ বাচাঁতে পারে।