কোটালীপাড়া প্রতিনিধি:
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে গ্রাম বাংলার অষ্টক গান । খুবই মজার গান। গ্রামের কিছু সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে এই গান গেয়ে থাকে।
পৌষ মাস শেষের পাঁচ রাতে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ছোট বয়সের ছেলেরা মিলে আলই বা আগলানো গান গান গেয়ে থাকে।
গানের কথা গুলো এমন ছন্দের হয় থাকে:
ওপারেতে তমাল গাছটি পাতা ঝিকমিক করে
সর্ব অঙ্গ বেঁধে ধরছে কৃষ্ণ গেছে কোথায়
কৃষ্ণ গেছে মথুরাতে হাতে মোহন বাঁশি
তেল ও জল দিযে বাঁশি রাখলাম কদমতলে।।
এই ধরনের গান গুলো হাতে থাকা করতাল বাজিয়ে গেয়ে ছোট বড় সকলকে বেশ আনন্দ দেয়।
অপর দিকে বড় বয়সের লোকজন মিলে অষ্টক গান গেয়ে থাকে। এসময় দুজনকে রাধা কৃষ্ণ সাজিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঘোরানো হয়। সাথে হারমনি ঢোল বাজিয়ে বিভিন্ন ধরনের বাউল,জারি,অষ্টকের গান, পদাবলী কীর্তন করা হয়। গানের তালে তালে রাধা কৃষ্ণ নৃত্য পরিবেশন করেন। এটা বাঙালির একটা ঐতিহ্য।
বিশেষ করে অষ্টক গান নিচের ছন্দের গায়:
কপাট খোল দরজা মেলো
ভক্ত আইছে দুয়রে
তোমার ভক্ত তোমায় ডাকে
বিছানা ছেড়ে দেখ চেয়ে ।।
ছন্দ মিলিয়ে এই ধরনের আরো কিছু গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লোকজ গান গাওয়া হয়। যা শুনলে বাঙালির হৃদয় কেড়ে নেয়।
তাছাড়া পৌষ সংক্রান্তি বলতেই বাঙালি সংস্কৃতির একটি বিশেষ উৎসবের দিন ধরে নেওয়া হয়। বাংলা পৌষ মাসের শেষের দিকে এই উৎসব পালন করা হয়।মাসেরর শেষের দিনে বিকালের রাতে বুড়ি মায়ের বাসা বানিয়ে বাসায় আগুন জ্বালিয়ে পরিবারের মৃত মানুষের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। দিনটিতে বিভিন্ন পিঠা পায়েস তৈরি করে। পৌষ মাসের শেষের দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বান্তু পূজা করা বহু পুরানো রীতি।
অনেক অনেক স্থানে পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে মেলা বসে। আমাদের পার্শ্ববর্তী রাজৈর উপজেলার কদম বাড়ী দিঘীর পাড় গ্রামে পাঁচ দিনের জন্য কবি গানের আসর বসে। পৌষ সংক্রান্তি বলতেই বাঙালির একটা নিজস্ব এবং লোকসংস্কৃতি ।
আসুন সকলে মিলে এই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতি কে রক্ষা করি। প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে যানরা বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে থাকেন তাদের উৎসাহ দেই। তাদের সাথে মিলে মিশে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করি।