বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন বৃদ্ধ আপতার শেখ। প্রায় ৮০ কোঠায় বয়স তার। এই বয়সে তাকে ঘরে বিশ্রামে থাকার কথা কিন্তু পেটের তাড়নায় কুড়াল নিয়ে ভোর হলেই ছুটতে হয় লোকের দ্বারে। কাষ্ঠে চিরে সংসার চালান তিনি। কখনো কাজ মেলে কখনো মেলে না। নিজেকে একজন মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে কষ্টের কথা জানালেন, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চরডাকাতিয়া গ্রামের বাসিন্দা আপতার শেখ। তিনি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি চান।
আজ মঙ্গলবার সকালে চিতলমারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তার পাশে কাঠ চেরাইকালে কথা হয় আপতার শেখের সাথে। এ সময় তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে নবধারা কে জানান, কপাল মন্দ বলেই আমার এ অবস্থা। যাদের সাথে যুদ্ধ করেছি তারা ভাতা পায় ঘর পায় আর আমি কাঠ চেরাই করে সংসার চালাই। একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। নদীর পাড়ে খাস জায়গায় খুপড়ি ঘরে থাকি। ৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। ৯ নং সেক্টরে মেজর জলিলের নের্তৃত্বে ভারতে ট্রেনিং নিয়েছি। মেজর ওসমানের দেওয়া যুদ্ধের সময়কার কাগজপত্র হারিয়ে ফেলায় অনেক দপ্তরে ঘুরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাইনি আজো। যুদ্ধের পরবর্তী সময়ে নকশাল বাহিনীর ভয়ে ১০ বছর যাবৎ চট্রগ্রামে গিয়ে আত্মগোপনে থেকেছি। পরবর্তীতে এলাকায় এসে অনেকের কাছে ঘুরেও কোন লাভ হয়নি। এখন কুড়ালই আমার একমাত্র সম্বল।
এ বিষয়ে চিতলমারী উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার মো. আবুতালেব শেখ নবধারা কে বলেন, আপতার শেখ ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বলে জানি। তবে তার কাগজ-পত্র না থাকায় আজো স্বীকৃতি পাননি।এছাড়া তার সাথে অনেকে প্রতারণা করেছে বলেও অভিমত দেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা জানান, আপতার শেখ মুক্তিযোদ্ধা কি না এ বিষয়ে তাকে কেউ কিছু জানাননি তবে তার সাথে যোগাযোগ করলে আশ্রয়কেন্দ্রে জায়গাসহ ঘর দিবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।