পদ্মাসেতু ঘিরে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার চাষিরা নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন। এখানকার চাষিরা সবজি, চিংড়ি ও সাদা মাছ চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করলেও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয় তারা এমন অভিযোগ চাষিদের। স্বপ্নের পদ্মাসেতু চালু হলে মাছসহ এখানকার উৎপাদিত কৃষি পণ্য যথা সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছানো সম্ভব হবে। ফলে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হলে চাষিরা তাদের কৃষি পণ্যে ন্যায্য মূল্য পাবে এমনই প্রত্যাশা তাদের। পদ্মাসেতু চালুর খবরে এ বছর চাষাবাদে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। এ সেতু ঘিরে নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর সোনালী স্বপ্ন দেখছেন এখানকার চাষিরা।
স্থানীয় চাষি ও কৃষি অফিসের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার প্রধান নদী মধুমতি, বলেশ্বর ও চিত্রা’র বিস্তৃণী চর ও আশপাশের জমিতে সবজিসহ অন্যান্য ফসল ব্যাপক ভাবে চাষ করে আসছে। এছাড়া বিল ও মাঠের জমিতে চিংড়ি ঘের খননের মাধ্যমে গত দু’ দশক ধরে সাদাসোনা খ্যাত চিংড়ি ও সাদামাছ চাষ করে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন এখানকার চাষিরা। পাশাপাশি চিংড়ি ঘেরে লাউ, কুমড়া, করলা, শশা আগাম টমেটো চাষ করে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র অর্জন করলেও রাজধানীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় সঠিক দাম থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে তারা। কিন্তু পদ্মাসেতু চালুর খবরে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম কৃষি প্রদান এলাকার চাষিরা এ বছর আগের তুলনায় অধিক জমিতে সবজি ও অন্যান্য ফসল চাষে ব্যাপক সাড়া লক্ষকরা গেছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার চরবানিয়ারী গ্রামের সবজি চাষি সোমনাথ রায়, সুরশাইল গ্রামের সজল মÐলসহ অসংখ্য চাষি উৎসাহ প্রকাশ করে জানান, রাজধানীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় সবজি ও কাঁচামালা নিয়ে ট্রাকে পৌঁছাতে এখান থেকে ৭থেকে ৮ঘন্টা সময় লাগত। অনেক সময় ফেরিঘাটে জ্যাম থাকার কারণে কাঁচামালে পঁচন ধরত। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে মধ্যস্বত্বভোগীরা পানির দামে সবজি কিনত। কিন্তু পদ্মাসেতু চালু হলে বাইরের পাইকারসহ ব্যবসায়ীদের সমাগম ঘটবে। এতে ফসলের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পীযূষ কান্তি রায় জানান, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য এ সেতু আর্শিবাদ। কৃষিপণ্য পাঠানোসহ রাজধানীর সাথে যাতায়াত এখন আমাদের মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যাপার। এ সেতু নির্মাণের মাধ্যমে দীর্ঘ দিনের কাঙ্খিত স্বপ্ন পূরণের জন্য বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার অসীম কুমার দাস নবধারা কে, পদ্মাসেতু চালুর খবরে এ বছর অধিক জমিতে সবজি আবাদ করা হয়েছে। চাষিরা এবার ন্যায্য মূল্য পাবার আশা করছে।