গাজীপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী মোতাহার হোসেন মোল্লা ৩৩০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।

সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলে। পরে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারা ও জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান এবং সহকারি রিটানিং অফিসার ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ যৌথভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।

চেয়ারম্যান পদে অন্য দুইজন যথা স্বতন্ত্রপ্রার্থী এসএম মোকছেদুল আলম ও মুক্তিযোদ্ধা মো. সামসুদ্দিন খন্দকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন।

এতে মোতাহার হোসেন মোল্লা (মোটরসাইকেল) মার্কায় ৩৩০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদন্ধী প্রার্থী এসএম মোকছেদুল আলম (আনারস) মার্কায় ২৯৪ ভোট পেয়েছেন। অপর প্রার্থী মো. সামসুদ্দিন খন্দকার (চশমা) মার্কায় পেয়েছেন ৩ ভোট। ৬৩৬ জন ভোটারের মধ্যে ৬২৮ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। তাদের মধ্যে এক জনের ভোট বাতিল হয়েছে। নির্বাচনে ৬টি কেন্দ্রে ইভিএম’এর মাধ্যমে দুপুর ২টার মধ্যে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন পরে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটানিং অফিসার কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানান, এবার গাজীপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, সাধারণ সদস্য পদে ২০জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ০৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেছেন। তাদের মধ্য একজন চেয়ারম্যান, ৫জন সাধারণ সদস্য এবং ২জন নারী (সংরক্ষিত) সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচিত সদস্যরা হলেন- সংরক্ষিত আসন-১ থেকে ১১৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মাহমুদা ইয়াসমিন। অন্যদিকে তার নিটতম প্রতিদ্বন্ধী রশিদা খন্দকার পেয়েছেন ১০৫ ভোট। সংরক্ষিত আসন-২ থেকে ২৩৯ ভোট পেয়ে উম্মে কুলসুম শিল্পী নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী তাসলিমা রহমান লাভলী পেয়েছেন ৬৪ ভোট।

সাধারন সদস্য পদে ১ নং ওয়ার্ডে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী না থাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে।

সাধারন সদস্য পদে ২ নং ওয়ার্ডে ৫১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মো. আমিনুর রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী আব্দুর রাজ্জাক পেয়েছেন ৪৭ ভোট।

সাধারন সদস্য পদে ৩নং ওয়ার্ডে ৫৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুস সালাম। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী শহীদুল্লাহ সরকার পেয়েছেন ৩৮ ভোট।

সাধারন সদস্য পদে ৪নং ওয়ার্ডে ৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আনিসুর রহমান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী ইমান উল্লাহ শেখ পেয়েছেন ৪৭ ভোট।

সাধারন সদস্য পদে ৫নং ওয়ার্ডে ৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন দোলোয়ার হোসেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধী বেনজির আহমেদ পেয়েছেন ৪৮ ভোট।

অন্যদিকে শূণ্য ভোট পাওয়া ৬জন প্রার্থী সকলেই সাধারণ সদস্য প্রার্থী ছিলেন। এদের মধ্যে ২ নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য প্রার্থীর মোট সংখ্যা ছিল ৯ জন। তাদের মধ্যে শূন্য ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী সংখ্যা হলো চার এবং ৩ নং ওয়ার্ডের সাধরণ সদস্য প্রার্থীর মোট সংখ্যা ছিল ৫জন তাদের মধ্যে শূন্য ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থী সংখ্যা হলো-২জন।

২নং ওয়ার্ডের শূন্য ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীরা হলেন আব্দুল বারেক (উটপাখি), দেওয়ান মোহাম্মদ শহিদুজ্জামান রিপন (তালা), মো. তোফাজ্জল হোসেন মৃধা (হাতি), মো. মঈনুল হোসেন ( অটোরিকশা) এবং ৩নং ওয়ার্ডের শূন্য ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীরা হলেন মো. নূরুল ইসলাম (ঘুড়ি) ও মো. শফিকুল ইসলাম দুলু (টিউবওয়েল)।

গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটানিং অফিসার কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ জানান, শুধুমাত্র শূণ্য ভোটই নয়, কোন প্রার্থী যদি নির্বাচনে মোট কাস্টিং ভোটের এক অষ্টমাংশ ভোট না পান তার জামানত বাতিল হবে।

উল্লেখ্য, গাজীপুরে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) মাধ্যমে ৬টি কেন্দ্রে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা হলো ৬৩৬জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪৮৪ এবং মহিলা ভোটার ১৫২জন। ভোটারদের মধ্যে গাজীপুর সদর উপজেলায় ১৩২জন, কালিয়াকৈর উপজেলায় ১৩১জন, শ্রীপুরে ১২০জন, কাপাসিয়ায় ১৪৬জন এবং কালীগঞ্জে ১০৭জন ভোটার ছিলেন। এতে চেয়ারম্যান পদে তিনজন, সাধারণ সদস্য পদে ২০জন এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন।