1. nabadhara@gmail.com : Nabadhara : Nabadhara ADMIN
  2. bayzidnews@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  3. bayzid.bd255@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  4. mehadi.news@gmail.com : MEHADI HASAN : MEHADI HASAN
  5. jmitsolution24@gmail.com : support :
  6. mejbasupto@gmail.com : Mejba Rahman : Mejba Rahman
বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন

গাজীপুরের কালীগঞ্জে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ

সামসুল হক জুয়েল, গাজীপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিতঃ বুধবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২২
  • ৩৩২ জন নিউজটি পড়েছেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘বঙ্গবন্ধু থিম ও থিংক পার্ক’ এবং ‘হাসুমণির সম্প্রতি’ নামে শিক্ষা বৃত্তি ও চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শতাধিক নারীর কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা আত্নসাধের অভিযোগ উঠেছে দুই বোনের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্তরা হলেন উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামের আবুল হাসেমের মেয়ে শাহানাজ খন্দকার শাহীন (৪০) ওখন্দকার সালমা শওমী (৩৫)। জানা গেছে, কোনো পদ-পদবি না থাকলেও এই দুই বোন নিজেদের ‘মহিলা লীগ নেত্রী’ বলে পরিচয় দেন। ঘটনাটি গাজীপুরের কালীগঞ্জে ঘটেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যৌথ স্বাক্ষরে অভিযোগ করেছেন প্রতারণার শিকার দক্ষিণ সোম গ্রামের নাজমিন আক্তারসহ শতাধিক ভূক্তভোগী নারী। অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আসসাদিকজামান।

ইউএনও বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ভূক্তভোগী নারী এবং অভিযুক্তদের নোটিশ করা হয়েছে। আজ বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ১১টায় অভিযোগের শুনানীকালে বাদী পক্ষের বক্তব্য শুনেছি। বিবাদীগণ শুনানীতে উপস্থিত না হওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, শাহীন ও শওমী পাঁচ-ছয় বছর আগে কালীগঞ্জ বাজারের দেওয়ান মার্কেটে ‘বঙ্গবন্ধু থিম ও থিংক পার্ক’ এবং প্রধানমন্ত্রীর ডাকনাম অনুসারে ‘হাসুমণির সম্প্রীতি’ প্রকল্পের আলাদা সাইনবোর্ড লাগিয়ে অফিস খোলেন। বড় বোন প্রকল্পের চেয়ারম্যান ও ছোট বোন এমডি বলে পরিচয় দিতেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অফিস খুলে মোটা বেতনে চাকরি, রেশন, পেনশন ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার প্রলোভন দেখান তাঁরা। এই ফাঁদে পা দেন শত শত নারী। সদস্য ভর্তির নামে তাঁদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন দুইবোন।

নাজমিন আক্তারসহ ভূক্তভোগীরা জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ওপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামে প্রকল্প দেখিয়ে কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের বাজার এলাকার দেওয়ান মার্কেট ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অফিস খুলেন খন্দকার সালমা শওমী ও শাহানাজ খন্দকার শাহীন নামের সহোদর দুই বোন। তারা শিক্ষাবৃত্তি ও চাকুরী সহ বিভিন্ন সুবিধাদি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় শত শত নারীর কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এছাড়াও ওইসব প্রকল্পে স্থানীয় স্বনামধন্য নারীদের উপদেষ্টা ও সদস্য দেখিয়ে সাধারণ নারীদের সঙ্গে প্রতারণার করেছে। মোক্তারপুর গ্রামের রিমা আক্তার (৩৫) জানান, শিক্ষা বৃত্তি ও চাকরি দেবেন বলে তাঁর মাধ্যমে এলাকার চার শতাধিক নারীকে সদস্য করা হয়েছে। জনপ্রতি নেওয়া হয়েছে ৪০০ টাকা। এখন প্রতিশ্রুতি পূরণ করছেন না দুই বোন। যেহেতু তাঁর মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয়েছে, তাই সদস্যরা তাঁর বাড়িতে গিয়েই টাকা ফেরত চাইছেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে স্বামীও তাঁকে বাড়ি ছাড়া করেছেন। বাবার বাড়িতে গেলে সেখানেও সদস্যরা ঝামেলা করছে। তিনি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।আরেক ভুক্তভোগী কালীগঞ্জ পৌর এলাকার দিলরুবা আক্তার (৩৩)বলেন, “‘হাসুমণির সম্প্রীতি’ প্রকল্পের ‘শাহীনসটিউটোরিয়াল’-এ মাসিক ২২ হাজার টাকা বেতন, এক হাজার টাকা হাজিরা বোনাস, রেশন এবং তিন বছর পর তিন লাখ ১৫হাজার টাকা পেনশন সুবিধায় লোক নিয়োগের কথা শুনে আমিযোগাযোগ করি। ২০ হাজার টাকা জামানত নিয়ে আমাকেনিয়োগ দেওয়া হয়। দুই-তিন মাস পর ”প্রতিষ্ঠান সরকারি হয়ে যাচ্ছে’ বলে আরো ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন তাঁরা। অভাবের কারণে ওই টাকা দিতে পারিনি। পরে চাকরি করলেও আমি বেতন পাইনি।” টিউরী গ্রামের নুসরাত ফারজানা লোপা (২৭) জানান, শাহীনসটিউটোরিয়ালে ৩১০জন নারীকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ২০থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন ওই দুই বোন।

বক্তারপুর এলাকার দিপালী রানী দাস (৩০) অভিযোগ করেন,’গবেষণা প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু থিম ও থিংক পার্ক নামের প্রকল্পেস্থানীয় শিক্ষার্থীদের তিন বছর প্রতি মাসে ৮০০ টাকা বৃত্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন দুই বোন। তিন-চারজন শিক্ষার্থীকে তিন-চার মাস লোক-দেখানো বৃত্তিও দেওয়া হয়। এ কথা ছড়িয়ে পরলে শত শত নারী ৪০০ টাকা ফি দিয়ে সদস্য হন। কিন্তু বৃত্তি আর দেওয়া হয়নি। পানজোরা গ্রামের ভূক্তভোগী আতিকা বেগম বলেন, নানা প্রলোভনে চাকুরী দেওয়ার পর ওই দুই নারী আমাদেরকে নানা শর্তজুড়ে দেয়। প্রতি সদস্যের প্রত্যেককে ৫টি করে কেন্দ্র তৈরিকরে তাতে নতুন নতুন সদস্য সংগ্রহ করতে বলে। প্রতি সদস্যফরম ও নিবন্ধনসহ প্রত্যেকের কাছ থেকে ৪শ টাকা করে দাবি করা হয়। বাহাদুরসাদী এলাকার সোনিয়া আক্তার বলেন, আমরা প্রতারণার শিকার হয়ে চাকুরীর জন্য দেয়া টাকা ও বেতন চাইতে গেলে উল্টো খন্দকার সালমা শওমীর স্বামী তিলক দেওয়ান আমাদের নানাভাবে হুমকি-দামকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল কথা লিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিচ্ছে। এমনকি তাদের কাছে জমা রাখা আমাদের ছবি দিয়ে পর্ণ ছবি তৈরিকরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ারও হুমকি দেয় তিলক দেওয়ান। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বক্তব্য নিতে পৌর এলাকার দেওয়ান মার্কেটে তাদের অফিসে গিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরে খন্দকার সালমা শওমীর ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে তিনি রিসিভ করলেও কথা বলেননি। অপর অভিযুক্ত শাহানাজ খন্দকার শাহীনের ব্যবহৃত মুঠোফোনে কল দিলে তিনি পরিচয় জানার পর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। কালীগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. বাদল হোসেন বলেন, আমার ওয়ার্ড এলাকায় অফিস নিয়ে প্রতারণা করায় ভূক্তভোগী নারীরা আমার কাছে বিষয়টি মৌখিকভাবে অভিযোগ জানায়। পরে আমি তাদের লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাতে পরামর্শ দেই।

এ ব্যাপারে স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী জুয়েনা আহমেদ বলেন, আমার অজান্তেই তারা আমাকে তাদের সদস্য করেছে। পরে তারা বিভিন্ন জনের কাছে আমি ওদের সঙ্গে আছি জানিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ভূক্তভোগী নারীরা আমাকে বিষয়টি জানালে আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ইউএনও’কে তা অবহিত করি। তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved সর্বস্বত্বঃ দেশ হাসান
Design & Developed By : JM IT SOLUTION