বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) পরিবারসহ নড়াইলের লোহাগড়ার পৈত্রিক এলাকায় আসেন। এ সময় তাঁর সাথে স্ত্রী নূর জাহান আহমেদ, ভাই রফিউদ্দিন আহমেদ,বোনসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন।

তিনি সকালে সড়ক পথে কালনার মধুমতি সেতু পার হয়ে লোহাগড়ার মধুমতি আর্মি ক্যাম্পে পৌছান। এ সময় তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বরণ করা হয় । আত্মীয়স্বজনদের সাথে কুশল বিনিময় করেন ও ক্যাম্পের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন । পরে তিনি মধুমতি রেলওয়ে ব্রীজের কাজের অগ্রগতি এবং বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। কালনা এলাকায় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন। তিনি লোহাগড়া উপজেলাধীন পৈত্রিক নিবাস করফা গ্রামে প্রস্তাবিত অধ্যাপক শেখ রোকনউদ্দিন আহমেদ ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করেন। এছাড়াও তাঁর পিতা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক এস এম রোকনউদ্দিন আহমেদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মল্লিকপুর ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের কার্যক্রম এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম রোকনউদ্দিন আহমেদ ভবন উদ্বোধন করেন। বিদ্যালয়ের পক্ষ হতে সেনাবাহিনী প্রধানকে মানপত্র প্রদান করা হয়। এ সময় সেনাবাহিনী প্রধান শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকবৃন্দ এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময় কালে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন শৈশবের স্মৃতিচারন করে বলেন,সব সময় ভালো কাজ করতে চাই, ভালো কাজের সাথে থাকতে চাই। তিনি বিদ্যালয়ে পিতার নামে শিক্ষাবৃত্তি চালু করবেন বলে জানান। এ ছাড়া তিনি বিদ্যালয়ের ১০ জন গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীদের আজীবন লেখাপড়ার ব্যায়ভার বহন করার ঘোষনা দেন। তিনি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও আধুনিক ডিজিটাল ক্লাস রুম করার জন্য ২০ লক্ষ টাকা প্রদানসহ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি দেন।

দুপুরে তিনি লোহাগড়া সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা ‘অঙ্কুর’ এর মোড়ক উন্মোচন করেন। তিনি বিদ্যালয়কে ১৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেন এবং বিদ্যালয়ে একটি জিমনেশিয়াম ও একটি অডিটরিয়াম নির্মান করতে সার্বিক সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন। এরপর তিনি লোহাগড়া সরকারী আদর্শ মহাবিদ্যালয় পরিদর্শনে যান। সেখানে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) কর্তৃক গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় ।তিনি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় করেন। সেনাপ্রধান আসন্ন শীতকালীন প্রশিক্ষণ উপলক্ষে ৫৫ পদাতিক ডিভিশন এর প্রস্তাবিত প্রশিক্ষণ, অপারেশন ও লজিষ্টিকস এর প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

পরিদর্শনকালীন সময় চিফ কনসালটেন্ট জেনারেল, এডহক কনস্ট্রাকশন সুভারভিশন কনসালটেন্ট মেজর জেনারেল এ কে এম রেজাউল মজিদ, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ও এরিয়া কমান্ডার, যশোর এরিয়া মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ, এসপিপি, এনডিইউ, পিএসসি সহ যশোর এরিয়ার উর্ধ্বতন সেনাকর্মকর্তাগণ, স্থানীয় গণ্যমান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ, বিদ্যালনোর শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।