নড়াইলে অনুমোদন ছাড়াই চলছে অধিকাংশ ইটভাটা। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে কৃষিজমি আর লোকালয়ে গড়ে ওঠা এসব ভাটায় বেপরোয়াভাবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ফলে একদিকে উজাড় হচ্ছে গাছপালা, অন্যদিকে কমছে কৃষি জমি। তদুপরি ইটভাটার তপ্ত কালো ধোঁয়া, ধুলা ও ময়লার কবলে হুমকির মুখে পড়েছে সংলগ্ন এলাকার ফসলি ক্ষেত, জনবসতি। ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে শিশু শ্রম। ইটভাটয় কেন্দ্রিক নিয়ম বর্হিভূত সকল কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি জেলা প্রশাসনের।
নড়াইলে নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শুষ্ক মৌসুম জুড়ে সাধারণত ইট তৈরি চলে। সে অনুযায়ী বর্তমানে প্রতিটি ইটভাটায় পুরোদস্তর ইট তৈরি চলছে। কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানোর নির্দেশনা থাকলেও জেলার অধিকাংশো ভাটায় জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব ভাটায় প্রকাশ্যে শত শত মন কাঠ জড়ো করে রাখা হয়েছে। মৌসুমে ভাটার আকার ও আয়তন ভেদে প্রতিটি ভাটায় ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ ইট পেড়ানো হয়ে থাকে। এ সংখ্যক ইট পোড়াতে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার হয় ৫০ থেকে ৭০ হাজার মণ কাঠ। ভাটায় ধোয়া নির্গমনের জন্য পরিবেশ অধিদফতর থেকে নূন্যতম ৬৫ থেকে ১২০ফিট কংক্রিটের স্থায়ী চিমনি ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু জেলার হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া সব ভাটায় ব্যবহার করা হচ্ছে স্বল্প উচ্চতার টিনের তৈরি চিমনি। ফলে ভাটা থেকে নির্গত কালো ধোঁয়া ও তাপে সংলগ্ন এলাকার ফল-ফসলের ব্যাপক ক্ষতি ছাড়াও জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। তাছাড়া কৃষিজমির উপরিভাগের উর্বর মাটি ইট তৈরির কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহারের ফলে চাষের অযোগ্য হয়ে পড়ছে।
নড়াইলের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হাবিবুর রহমান নবধারাকে বলেন, কিছু কিছু ইটভাটা বিভিন্ন অজুহাতে কাঠ পুড়ানোর চেষ্টা করছে। আমরা সেখানে জরিমানা করেছি। প্রতিটি সাড়ে ৯ইঞ্চি দৈর্ঘ সাড়ে ৪ইঞ্চি প্রস্থও পোনে ৩ ইঞ্চি উচ্চতার প্রচলিত আকৃতির ৮ হাজার ইটের জন্য কাঁচামাল হিসাবে ১ হাজার ঘনফুট মাটি ব্যবহার হয়। এজন্য প্রতিটি ভাটায় বছরে অন্তত ৫/৬ একর জমির উপরিভাগের মাটি ব্যবহার হয়। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, নড়াইল জেলায় অর্ধশতাধিক ইটভাটা রয়েছে, যার প্রায় অর্ধেকেরই নেই যথাযথ অনুমোদন।