বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের খাদ্য গুদাম থেকে ঈদ উপলক্ষে হত-দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ভিজিএফের ৭২০ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে।
রোববার (২৩ এপ্রিল) গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইউপি কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম সাইফুল্লাহ এই চাল জব্দ করেন।
পরে সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম সাইফুল্লাহর উপস্থিতিতে দরিদ্রদের মধ্যে এই চাল বিতরণ করা হয়।
ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে হতদরিদ্রদের জন্য খানপুর ইউনিয়নে ৯৪৮ জনের জন্য ১০ কেজি করে মোট ৯ হাজার ৪৮০ কেজি চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ৭২ জন চাল না নেওয়ায় গুদামে ৭২০ কেজি চাল অবশিষ্ট রয়ে যায়।
তবে চালপ্রাপ্তরা বলছেন, রোজার সময়ে চাল নিতে ইউনিয়ন পরিষদে গেলেও, তাদের চাল দেওয়া হয়নি।
খানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আমিরুন্নেছা বেগম নামে এক নারী বলেন, ঈদের আগে আসছিলাম কিন্তু আমাকে কোনো চাল দেওয়া হয়নি। গতকাল রাতে চাল নিতে আসার জন্য সংবাদ দিয়েছিল। তাই আজকে এসে চাল নিলাম। এই চালগুলো ঈদের আগে দিলে আরও ভালো হতো।
খানপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ফকির মনিরুজ্জামান বলেন, ঈদ উপলক্ষে দেওয়া চাল আত্মসাতের জন্য মজুদ করেছিল চেয়ারম্যান ফকির ফহমউদ্দিন। এর ফলে আমাদের দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আমরা তদন্তপূর্বক চেয়ারম্যানের বিচার চাই।
চাল আত্মসাতের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিন বলেন, যারা চাল পাবে তাদের সবাইকে ঈদের আগেই চাল নেওয়ার জন্য খবর পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু প্রচণ্ড গরম ও রোজা থাকায় কিছু মানুষ চাল নিতে আসেনি। তাদের চাল গুদামে ছিল। প্রশাসনের নির্দেশে সেই চাল আজকে বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু কিছু মানুষ আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।
চাল বিতরণের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ট্যাগ অফিসার সদর উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মোঃ জাহিদুর রহমান বলেন, সব চাল বিতরণ করতে পারেনি এই বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে সঠিক সময়ে অবহিত করেননি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম সাইফুল্লাহ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাল জব্দ করেছিলাম।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ভিজিএফর চাল বিতরণ না করে আত্মসাতের চেষ্টা করছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে যায় এবং চাল জব্দ করে। পরবর্তীতে কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে ৭২ জনের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। কেন সঠিক সময়ে চাল বিতরণ করেননি সে বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে।