অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রভাব খাটানোর অভিযোগে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সালাউদ্দিন মিয়ার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন ৯ ইউপি সদস্য। রবিবার (৩০ এপ্রিল) জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ৯ সদস্য। অভিযোগে চেয়ারম্যানের প্রতি তারা অনাস্থা প্রকাশ করেছেন। ফলে ওই ইউনিয়ন পরিষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অভিযোগে উল্লেখ আছে, মোঃ সাউদ্দিন মিয়া চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই ভূমি হস্তান্তরের ০১% বরাদ্দের টাকা,মহারাজপুর ইউনিয়নের সকল হাট-বাজারের ২০২১-২০২২ ইং ও ২০২২-২০২৩ ইং অর্থ বছরের ট্রেডলাইসেন্স বাবদ যথা ক্রমে প্রায় ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ইউনিয়ন থেকে ২০২১-২০২২ ইং ও ২০২২-২০২৩ ইং অর্থ বছরের আদায়ই কৃত ট্যাক্স এর প্রায় ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে উক্ত টাকা আত্বসাত করেছেন। তিনি টিয়ার,কাবিখা,কাবিটা,এলজিএসপি, টিসিবি, ভিজিডি, কৃষি বিজ-সার এর বিষয় গুলো নিয়ে পরিষদে কোন প্রকারের আলাপ আলোচনা ছাড়াই তার খিয়াল খুশিমত পরিচালনা করেন। পরিষদের মাসিক মিটিং গুলি অনিয়োমিত ভাবে করে আসছেন। বিভিন্ন সময় মিটিং করলেও, মিটিং এর মূল এজেন্ডা গোপন রেখে আলোচনা ও রেজুলেশন খাতায় সদস্য ও সদস্যাদের চাপ প্রয়োগ করে একাধিক স্বাক্ষর নিয়েছেন। চলতি অর্থ বছর ২০২২-২০২৩ ইং প্রথম প্রর্যায় অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি ( ই জি পি পি) তে প্রকল্প কমিটির চেয়ারম্যানদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে উক্ত প্রকল্পের কাগজ পত্র তৈরি করে সরকারি দপ্তরে জমা দিয়ে বিল উত্তলন করার অভিযোগ করেন ইউপি সদস্যরা। অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন, ইউনিয়নের ৮ থেকে ১০ টি স্থান থেকে বিভিন্ন প্রাজাতির বড় বড় প্রায় শাতাদিক গাছ বিক্রি করে প্রায় ৫০ লক্ষ্য টাকা আত্বসাত করেছেন।
উল্লেখিত অভিযোগে সদস্যগণ আরো উল্লেখ করেন, সদস্যগণ ইউনিয় পরিষদের দ্বায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে চেয়ারম্যান সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ ও বিভিন্ন প্রজেক্ট অনিয়মের সাথে যথা ক্রমে ০৭, ০৮ ও চেয়ারম্যানের নিজ ০৯ নং ওয়ার্ডে উন্নয়ন মূলক কাজ করছেন, বাকি ওয়ার্ড গুলিতে দৃশ্যমানের কোন প্রকারের উন্নয়ন মূলক কাজ হয় নাই। ইউনিয়নের ০৮ ও ০৯ নং ওয়ার্ডে ডানিডা প্রকল্পের কাজে ভেকু ব্যবহার করে নামে-বে নামে অগ্রণি ব্যাংক লিমিটেড, বনগ্রাম শাখায় একাউন্ট খুলে প্রায় ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা উত্তলোন করে তা আত্বসাত করেন চেয়ারম্যানসহ তার সিন্ডিকেটদ্বয়।
শুধু তাই নয়, বিধি-বহির্ভূতভাবে নাগরিক, ওয়ারিশ ও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন সনদ দিতেও অবৈধভাবে উদ্দ্যেক্তা নগদ অর্থ গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ৯ ইউপি সদস্য। ইউপি সদস্য রেহানা আক্তার লাকি বলেন, সালাউদ্দিন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই অনিয়ম-দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছেন। নানা ভয়ভীতি উপেক্ষা করে আমরা দুই জন নারী সদস্য ও সাতজন পুরুষ সম্মিলিতভাবে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মিয়া বলেন, আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়টি জানা নেই। জেলা প্রশাসক বা ইউএনও অফিস থেকে এখন পর্যন্তু আমাকে কিছু বলা হয়নি। তবে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমাম রাজি টুলু অনাস্থা প্রস্তব পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।