বাগেরহাটের কচুয়ায় বাগেরহাট সদরের বাড়ুইপাড়া ইউনিয়নের রাজিব শেখ(১৯) নামের এক প্রেমিক যুবকের রহস্য জনক মৃত্যু হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর রাত ১০ টা থেকে ১৬ অক্টোবর ভোর ৫ টার মধ্যে যে কোন এক সময় যুবকটি আত্মহত্যা করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। ১৬ অক্টোবর ভোরে কচুয়া উপজেলার গিমটাকাঠি গ্রামের প্রেমিকা রুমির ঘরের সামনে পিচের রাস্তার পাশে জিএল(কচা) গাছে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত রাজিব শেখ বাগেরহাট সদর উপজেলার বারইপাড়া ইউনিয়নের শাহেবাহার গ্রামের সাইফুল শেখের ছেলে।
এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়,নিহত রাজিব শেখ কচুয়া উপজেলার গিমটাকাঠি গ্রামের আয়না বেগমের মেয়ে রুমি আক্তারের সাথে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।১৫ অক্টোবর বেলা ২ টার দিকে নিহত যুবকটি প্রেমিকা রুমির সাথে দেখা করতে কচুয়া আসে।এসময় রুমি আক্তারের পরিবারের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়। এ সূত্র ধরেই ঐ যুবক আত্মহত্যা করেছে বলে রুমির পরিবার থেকে ধারনা করা হচ্ছে।
বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়,১৫ অক্টোবর রুমির সাথে নিহত রাজিব দেখা করতে আসলে রুমির আসেপাশের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে রাজিবকে মারধর করে এলাকা থেকে বের করে দেয়।পরবর্তীতে পরদিন সকালে রুমির বসত ঘরের সামনে পিচের রাস্তার পাশে জিএল(কচা) গাছের ডালের সাথে গলায় রশি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় স্থানীয়রা তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানার নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে রুমি আক্তার বলেন,ফেসবুকের মাধ্যমে ছেলেটির সাথে বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে কয়েক মাস আগে জানতে পারি তার মাথায় একটি টিউমার আছে, তাই পরবর্তীতে তার সাথে সম্পর্ক করতে অস্বীকার করি।এরপর থেকেই সে আমাকে নানা ভাবে বিরক্ত করে আসছিল।তবে কেন সে আত্মহত্যা করেছে এ বিষয়ে আমার জানা নেই।
রুমি আক্তারের মা আয়না বেগম বলেন,আমার মেয়েকে ছেলেটি ৩/৪ মাস আগে বিয়ে করতে চেয়েছিল কিন্তু মেয়ের বিয়ের বয়স না হওয়া সহ নানা কারনে আমরা রাজি না হওয়ার স্থানীয় ভাবে বসে বিষয়টি মিমাংসা করি। হটাৎ আজ সকালে ছেলেটি আমার ঘরের সামনে কেন আত্মহত্যা করেছে এ বিষয়ে আমাদের জানা নেই।
নিহতের চাচা সিঙ্গাপুর প্রবাসী আসাদুজ্জামান শেখ মুঠো ফোনে বলেন,মেয়েটির সাথে আমার ভাইর্পোর অনেকদিন থেকে সম্পর্ক ছিল।যতদুর জানি মেয়েটি আমাদের গ্রামের বাড়িতেও যাতায়াত করত। শুনেছি গতকাল ওখানে আমার ভাইর্পোকে মারধর করা হয়েছে। তাই আমাদের সন্দেহ ছেলেটিকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
নিহতের বড় ভাই সজিব শেখ বলেন,আমার ভাইকে গত দুই দিন ধরে পাওয়া যাচ্ছিল না এবং মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া গেছে।আজ সকালে শুনি আত্মহত্যা করেছে কিন্তু আমরা ধারণা করছি তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আমি আমার ভাইয়ের হত্যার সঠিক বিচার চাই।
কচুয়া থানা অফিসার ইন চার্জ মো: মহাসীন হোসেন আমাদের প্রতিনিধিকে জানান যে, আমরা ছেলেটির আত্মহত্যার কথা শুনে ঘটনা স্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করি,পরে সুরাতহাল করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করি।নিহত যুবকের ময়না তদন্তের রিপোর্ট শেষে এ ঘটনার সঠিক কারণ জানা যাবে।এ ব্যাপারে নিহত যুবকটির বাবা কচুয়া থানায় ১টি অপমৃত্যু মামলা দােয়ের করেছে।তবে এ বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।