নড়াইলের কালিয়া উপজেলা ও নড়াগাতী থানার একাধিক ব্যক্তিকে বিদেশে (মালায়েশিয়া) পাঠানোসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারনার মাধ্যমে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে থানার পদুমা গ্রামের মৃত ছলেমান মোল্যার ছেলে প্রবাসী আজিবর মোল্যা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
২০ নভেম্বর (সোমবার) বিকেল ৪টায় ওই এলাকায় গেলে ভুক্তভোগীরা জানায়, উপজেলার বিভিন্ন অনেকের কাছ থেকে বিদেশে পাঠানো, ছেলের চাকুরী, জমি বন্ধকসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁকা চেক ও ৩শত টাকার সরকারী ষ্ট্যাম্পে এ টাকা নিয়েছেন আজিবরের স্ত্রী শিখা বেগম ও সন্তান ইমোন মোল্যা। বিগত মাস খানেক তারা পলাতক থাকায় অনেকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানা যায়।
একই গ্রামের মৃত হারেজ গাজীর ছেলে গাজী মাহামুদুল আলম জানান, তার ছেলে ও ভাগ্নেসহ চার জনকে ৩ মাসের মধ্যে বিদেশে (মালায়েশিয়া) পাঠানোর বিষয়ে কথা হয় প্রবাসী আজিবরের সাথে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারী ষ্ট্যাম্পে দুই দফায় তিনি আজিবরের স্ত্রী-সন্তানদের কাছে ১১ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। পরিশেষে নির্ধারিত সময়ে ভিসা দিতে ব্যর্থ হলে আজিবরের ছেলে ইমোন তার কালিয়া কৃষি ব্যাংকের দুটি ফাঁকা চেক প্রদান করেন এবং একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই বলে জানিয়ে দেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। অতঃপর অভিযুক্তদের সাথে কথা বললে সদুত্তর না পাওয়ায় তিনি আজিবরসহ তার ছেলে ইমোন মোল্যা(২৫), স্ত্রী শিখা বেগম(৩৫), মেয়ে খাদিজা বেগম ও জামাই ফরিদপুরের গোয়ালন্দ থানার যদু ফকিরপাড়া গ্রামের বারিক বিশ্বাসের ছেলে টুটুল বিশ্বাসসহ আজিবর মোল্যার শ্যালক লোহাগড়া উপজেলার ইতনা গ্রামের মঞ্জেল ফকিরের ছেলে ইদ্রিস ফকির(৬০) ও পান্নু ফকির(৩৫) কে অভিযুক্ত করে নড়াগাতী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান।
অপর ভুক্তভোগী বিলব্যাউচ গ্রামের মোঃ এনামুল মোল্যা ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অবশেষে বিজ্ঞ আদালতে চেক জালিয়াতির মামলা করেছেন তিনি। একই গ্রামের সামিউল ইসলাম দিয়েছেন ৫ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা বলে জানান। এ সময় উপস্থিত ভুক্তভোগী পদুমা গ্রামের শাহিদ মোল্যা, ইব্রাহীম শেখ, নাদিরা খানম সোয়েব মুন্সী বলেন, আমাদের কাছ থেকে আজিবরের স্ত্রী শিখা বেগম তার ছেলের চাকুরী বিষয়ে ও বিদেশে পাঠানোর কথা বলে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মালায়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে ভাওড়ির চর গ্রামের অভিজিৎ দাশের কাছ থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, নলডাঙ্গা গ্রামের আকিজ শেখ জমি বন্ধকী বাবদ ৫০ হাজার দিলেও জমিতে যেতে পারেননি। প্রতারক পরিবারের উপযুক্ত শাস্তি দাবীসহ পাওনা টাকা আদায়ে প্রশাসনের সহযোগীতা চেয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বাড়ীতে গেলে ঘর তালাবদ্ধ দেখা যায়। শিখা বেগম ও তার ছেলে ইমোন মোল্যার মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে নড়াগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকান্ত সাহা বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।