শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
রাজবাড়ীর বরাট ইউনিয়নের মতিয়াগাছিতে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জমজমাট নুচির মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৫ এপ্রিল শনিবার রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়ন এবং গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মতিয়াগাছীর মাঠে এ মেলার আয়োজন করা হয়।
স্হানীয়রা জানান, জমিদার মঙ্গল বাগচি, তার ছোট ভাই হরিপদ বাগচি ও বুদু বাগচি তাদের জমিদারি আমলে শতবর্ষ আগে বাগচিবাড়ির মাঠে এ মেলার গোড়াপত্তন করেন। সেই জমিদাররা না থাকলেও আজো তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এলাকার মানুষ।
প্রতিবছর চৈত্রমাসে ১ দিনের জন্য এই মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে।
সত্তোরোর্ধ বয়সী স্হানীয় বাসিন্দা মোঃ সিদ্দিক আলী খান জানান, তারা ছোটবেলা হতে এই মেলাটা দেখে আসছেন। তখন বড় বড় সার্কাস পাটি মেলায় আসত। এখন অবশ্য তা দেখা যায় না। তবে নাগরদোলা, চরকি,হরেক রকমের শতশত দোকানের পসরা আগের মতোই এ মেলায় বসে থাকে। নিজ এলাকা ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা হতে বহু মানুষ এ মেলায় এসে থাকে। এলাকার মেয়েরা সব মেলা উপলক্ষে শ্বশুর বাড়ি হতে বাবার বাড়িতে চলে আসে। হাজার হাজার নারী- পুরুষ, শিশু ও বয়স্কদের পদচারনায় দিনভর মুখর থাকে মেলার মাঠ। তারা মেলায় এসে কেনাকাটা করে, খাওয়া-দাওয়া করে এবং মেলার বিভিন্ন উপসর্গ উপভোগ করে।
তবে এ মেলায় জমজমাট জুয়া খেলা এবং জুয়ার টাকা,স্টলের চাঁদার টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে মারামারি হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
মেলায় আগত স্হানীয় সালাম সরদার বলেন, এটাকে নুচির মেলা বলে। নুচি হলো হিন্দুদের একটা তিথি। হিন্দু জমিদাররা এই মেলা চলু করেন। বহু বছর ধরে এ মেলা এ অঞ্চলের একটা সামাজিক উৎসবে পরিনত হয়ে আছে।
রাজবাড়ী সদর হতে আসা তৈয়বুর রহমান জানান, এই মেলাকে ঘিরে আগে দেখতাম প্রতিবছরই মারামারি হতো। মাঝে কয়েক বছর এ কারনে বন্ধও ছিল। তবে এবার ভালো মতোই অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গোয়ালন্দ পৌর এলাকা হতে আসা গৃহবধূ সামিয়া ফারহানা, যুবক জুবায়ের হোসাইন বাকী, রেজাউল ইসলাম সহ অনেকেই জানান, প্রতিবছরই এই মেলায় আসি। ঘোরাঘুরি করি, কেনাকাটা করি, খাইদাই ফুর্তি করি। খুব ভালো লাগে। তবে মেলার মাঠে আসার রাস্তা খুব সরু।যানজট লেগে থাকে। রাস্তাগুলো চওড়া করা দরকার।
মেলা প্রসঙ্গে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, মেলার বিষয়টি আমার জানা নেই। কারা আয়োজন করেছে, ওখানে কি হচ্ছে না হচ্ছে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।