শামীম শেখ, গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী)
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে জাহাজ শ্রমিক জিহাদ সরদার ত্রিভুজ প্রেম ও পরকীয়ার নির্মম বলি হয়েছেন বলে জানা গেছে।
গত ২৭ এপ্রিল রবিবার সকালে গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীর অন্তার মোড় এলাকা হতে তার মাথাবিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মাথার কোন হদিস মেলেনি।
পরিবারের সদস্যরা লাশের পোশাক ও শরীরের বিভিন্ন চিহ্ন দেখে তাকে জিহাদ বলে সনাক্ত করে।
এ ঘটনায় পরদিন ২৮ এপ্রিল সোমবার জিহাদের বাবা সহিদ সরদার বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তিনি উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের কাচরন্দ গ্রামে।
মামলার এজাহারভুক্ত তিনজন আসামি হলেন একই গ্রামের দুবাই প্রবাসী মোঃ খলিলের স্ত্রী সুমানা পারভীন সেতু (২৪), জিহাদের চাচা বাবলু সরদারের ছেলে সোহাগ সরদার (২৭) ও প্রতিবেশী হারেজ বেপারীর ছেলে হৃদয় বেপারী (২৪)।
এ মামলার প্রধান আসামি সুমানা পারভীন সেতু হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন বলে বুধবার রাজবাড়ীর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানা ও দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে ২৯ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে সেতুর বাবার বাড়ি একই ইউনিয়নের চর বালিয়াকন্দি গ্রাম হতে তাকে গ্রেফতার করে বুধবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠায়। এর আগে মামলার দুই নাম্বার আসামি সোহাগকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিহত জিহাদ নারায়নগঞ্জের একটি জাহাজ মেরামত কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি বাড়িতে এসে সন্ধ্যার পর হতে নিখোঁজ হন।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি সুমানা পারভীন সেতু বুধবার রাজবাড়ীর আদালতে জিহাদ হত্যার সাথে তার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
সেতুর উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি আরো জানান, জিহাদের সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। একই সাথে হৃদয় ও সোহাগের সাথেও সে অনৈতিক প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যায়। এ অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার সুবিধার্থে সে বাবা ও স্বামীর বাড়ি বাদ দিয়ে হৃদয়দের বাড়ির পাশে বাড়ি ভাড়া নিয়ে ৫ বছর বয়সী একমাত্র সন্তান নিয়ে বসবাস করত।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জিহাদ কর্মস্হল হতে বাড়ি ফিরে ওই দিন গভীর রাতে ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে যায়। কিন্তু হৃদয় ও সোহাগ ওই নারীর সাথে যোগসাজশ করে জিহাদকে নদীর পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বডি ও মাথা নদীতে ফেলে দেয়।
এ হত্যাকান্ডের এজাহারভুক্ত পলাতক আসামি হৃদয় সহ পরিকল্পনার সাথে আরো কেউ জড়িত ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখে দ্রুত তাদেরকে গ্রেফতার করা হবে বলে ওসি রাকিব জানান।