শরিফুল ইসলাম, নড়াইল
নড়াইলের সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের শাহাবাদে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।এ ঘটনায় বুধবার রাতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন কে অভিযুক্ত করে নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন,শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান মামলা নং-২৫/২০২৫।
মামলার আসামিরা হলেন,প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি মুজিবুর রহমান,সদস্য জরিনা বেগম,রজব আলী,আজিবর,ইলিয়াছ,ইমান আলী,মোহাম্মদ ওমর,হায়দার আলী,আবু সাঈদ,এনামুল হক ও শরিফুল ইসলাম ।
মামলার এজহারে বাদি উল্লেখ করেছেন,গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কর্তন ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখেন,কর্তনকৃত গাছ বোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়,মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই সরকারি খাস জমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছে। জব্দকৃত গাছের লগ,ডালপালা এবং পূর্বে কর্তনকৃত গাছের অবশিষ্ট ভূমি সংলগ্ন গুড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কর্তন ও বিক্রয় করা হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা,ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো লাগানো হয়েছে। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়ে ছিল,তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। ইউপি মেম্বার ইব্রাহিম ফোন করে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন গাছের ডালপালা কেটে ফেলেছে তা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। কিন্তু পরবর্তীতে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
শাহাবাদ ইউপি’র চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানান, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কর্তনের অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু না।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন,প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তি মালিকদের জমিতে ছিল,পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাস জমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধ মামলা করা হয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।