গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী ১০৩ নং সীতানাথ মথুরানাথ (মডেল) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আলোচিত- সমালোচিত প্রধান শিক্ষক মাহাবুব মুন্সী ও সহকারী শিক্ষিকা রুকসানা আক্তার লিরা দম্পতির অনিয়ম ও দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায় দৈনিক আমাদের কন্ঠের স্টাফ রিপোর্টার মুন্সী সাদেকুর রহমান শাহীনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) নাজমুন্নাহার বন্যা ও দরবেশ বাবা নামের ফেসবুক আইডি থেকে চাঁদাবাজ আখ্যা দেওয়া সহ বিভিন্ন অসামাজিক ও আপত্তিকর মন্তব্য লিখে অপপ্রচার চালায়।
এ বিষয়ে দৈনিক আমাদের কন্ঠ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মুন্সী সাদেকুর রহমান শাহীন বলেন, গোপালগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এস এম মডেল সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে কোচিং বানিজ্য ও অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার চিত্র জনস্বার্থে সংবাদ আকারে তুলে ধরেছি। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংবাদের সত্যতা পেয়ে কার্যকরী ব্যবস্থাও গ্ৰহণ করেছেন। এতে করে ওই শিক্ষক দম্পতি ক্ষিপ্ত হয়ে ভাড়াটিয়া মানুষ দিয়ে আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাঁদাবাজ আখ্যা সহ বিভিন্ন আপত্তিকর মন্তব্য লিখে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এতে আমার পারিবারিক ও সামাজিক সম্মান হানি ঘটেছে। এবিষয়ে আমি দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অনুসন্ধানে জানা গেছে চলতি বছরের গত ২৬, ২৭ ও ২৮ এপ্রিল দৈনিক আমাদের কন্ঠ, মানবজমিন, আজকের বাংলাদেশ, সময়ের প্রত্যাশা, ভোরের বাণী, যুগের সাথী সহ বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ১০৩ নং এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষক দম্পতি মাহাবুব মুন্সী ও রুকসানা আক্তার লিরাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদের সূত্র ধরে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও গোপালগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিও) পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কর্মকর্তাগণ শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে ওঠা কোচিং বাণিজ্য, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের সাথে দুর্ব্যবহার সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পায়। পরবর্তীতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গত ২৩ মে ২০২৫ ইং তারিখে শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করেন এবং ২৫ মে ২০২৫ ইং তারিখে সহকারী শিক্ষিকা রুকসানা লিরাকে এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৩ নং পশ্চিম তেঁতুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে বদলি করেন। কিন্তু বেপরোয়া ওই শিক্ষিকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বদলির নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অনিয়মে নিজেই স্বামী প্রধান শিক্ষক মাহাবুব মুন্সীর কাছ থেকে ৩ দিনের ছুটি নেন। পরবর্তীতে তিন দিনের ছুটি শেষ হওয়ার পরেও নুতন কর্মস্থলে যোগদান না করে বানোয়াট ডাক্তারী প্রত্যয়ন দেখিয়ে ১৪ দিনের মেডিকেল ছুটির আবেদন করেন। প্রথমে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিও) পলাশ সর্দার ছুটির আবেদনে সুপারিশ না করলেও পরে অজানা কারনে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোছাঃ জ্যোৎস্না খাতুন তাকে মেডিকেল ছুটি মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে এস. এম. মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিক্ষা অফিসের বেশকিছু কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিকট থেকে গোপন সূত্রে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষিকা রুকসানা আক্তার লিরা বে-আইনীভাবে ভূয়া মেডিকেল ছুটি নিয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট সংবাদকর্মীদের চাপ প্রয়োগ করাচ্ছে। এছাড়াও সত্য সংবাদ প্রকাশ করা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাবে অপপ্রচার চালিয়ে বদলির আদেশ স্থগিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোঃ মোজাহারুল হক বাবলু আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন, শুধু গণমাধ্যমকর্মী নয় যে কোন নাগরিকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালানো অপরাধ। এই অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্ৰহণ কারার জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।