মোঃ জিহাদুল ইসলাম, নড়াইলঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চোরখালী আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা মাদক কারবারী ও মানব পাচারকারী উজ্জল বিশ্বাস এর বিরুদ্ধে গৃহবধুকে প্রলোভন দেখিয়ে ৪ বছরের পুত্রসন্তানসহ উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ১৫ সেপ্টেম্বর (বুধবার) এ ঘটনা ঘটেছে বলে গৃহবধুর স্বামী মাসুদ মোল্যা ও শাশুড়ী নিহার বেগম জানান। উজ্জল বিশ্বাস পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী ও কুষ্টিয়া জেলার ইকবাল বিশ্বাসের ছেলে। পানি উন্নয়ন বোর্ডে চাকুরীর সুবাদে ইকবাল বিশ্বাস বড়দিয়া থাকাকালীন চোরখালী গ্রামের মৃত লাল মিয়া বিশ্বাসের মেয়ে মুনিয়া বেগমকে বিবাহ করেন এবং উজ্জলের বয়স ১৮ মাসের সময় তাদের বিবাহ বিচ্ছদ ঘটে।
ভুক্তভোগীর পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর পূর্বে লোহাগড়া থানার নোয়াগ্রাম এলাকার ছিরু শেখের মেয়ে শলোকা ওরফে রিক্তার (২৪) সাথে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক লোহাগড়া থানার তেলকাড়া গ্রামের মৃত হোসেন মোল্যার ছেলে মাসুদ মোল্যার বিবাহ হয়। তাদের ঘরে ৮ বছরের একটি কন্যা ও ৪ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। তেলকাড়া গ্রামে সহিংসতার কারণে তারা বড়দিয়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। এরই সুবাধে উজ্জল তাদের বাসায় যাতায়াতের সুযোগ নেয়। এক পর্যায়ে রিক্তাকে নিয়ে মাসুদ তার শশুরবাড়ী লোহাগড়া থানার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামে থাকা শুরু করে। আজ হঠাৎ জানতে পারে উজ্জল মাসুদের স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে চলে গেছে। মাসুদ মোল্যা ও স্বজনরা তার ছেলেকে ফেরৎ চান। স্থাণীয়রা জানান, একাধিক বিয়ের নায়ক উজ্জল বিশ্বাস একজন মাদক কারবারী, এর আগেও প্রোলোভন দেখিয়ে অনেক মেয়েরে সর্বনাশ করেছে। তার স্ত্রীদের সহযোগীতায় সে মাদক ও মানব পাচার কার্য চালায়। এছাড়া তার নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে বলে স্থাণীয়রা জানান। মাসুদ মোল্যার মা নিহার বেগম বলেন, উজ্জল আমার বিটার বউ ও পোতাকে ইন্ডিয়া পাচার করে দেবে। ওর মা ও স্ত্রীর সহযোগীতায় এর আগেরও এ ধরনের ঘটনা ও ঘটাইছে আমরা শুনছি। আমি অসহায়, আমার স্বামী নেই, ঘাটে বাদাম বিক্রি করে আমি সংসার চালাই। আমি আমার পোতাকে ফেরৎ চাই। অভিযুক্ত উজ্জল বিশ্বাসের মা মুনিয়া বলেন, এ ব্যপারে আমি কিছুই জানিনা। ৩ বছর যাবত উজ্জলের সাথে আমার কোন কথা হয় না। অথচ চোরখালী আশ্রায়ন প্রকল্পে উজ্জলের মায়ের নামে বরাদ্দকৃত ঘরে দু’সন্তানসহ প্রথম স্ত্রী মিনাক্ষীকে নিয়ে উজ্জল থাকে বলে মুনিয়া বেগম জানান।
এ বিষয়ে উজ্জলের ১ম স্ত্রী মিনাক্ষি বেগম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার সতিন (উজ্জলের ২য় স্ত্রী) মালার কারসাজিতে এগুলো হয়েছে বলে মালা তাকে ফোনে জানিয়েছে।
এ বিষয়ে বড়দিয়া ঘাটের নার্সারী ব্যবসায়ী টুটুল শেখসহ সচেতন এলাকাবাসী জানান, মহাজন-বড়দিয়া খেয়াঘাট এলাকায় খুচরা গাঁজা ব্যবসায়ীদের মাল উজ্জল সাপ্লাই দেয়। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে অতি গোপনে অত্র এলাকায় গাঁজা স¤্রাট হয়ে ওঠেছে সে। কুখ্যাত মাদক কারবারীদের সাথে তার ওঠাবসা। এর আগেও সে এলাকা থেকে মেয়ে পাচার করে ভারতে নিয়ে গেছে বলে জনশ্রুতি আছে এবং মাদকসহ কয়েকবার পুলিশের হাতে আটক হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। অত্র এলাকার মাদকের মোটা চালান তারই মাধ্যমে আসে এবং একাধিক বিয়ে করে স্ত্রীদের সহযোগীতায় মাদক ও মানব পাচারের ব্যবসা চালায়। উজ্জল আগে বড়দিয়া বাজারে কুলিগিরি করত। হঠাৎ ওর বেশভুসা পরিবর্তন হয়ে যায়। সে প্রথমে বিয়ে করে কালিয়া এবং লোহাগড়া থানার পাংখারচর গ্রামে ২য় বিবাহ করে স্ত্রীকে নিয়ে ভারতে চলে যায়, উপজেলার মাউলী ইউনিয়নের মহাজন ব্যপারী পাড়ার হেকমত শেখের মেয়েকেও বিবাহ করলে উজ্জলের কার্যকলাপ খারাপ দেখে ডিভোর্স দেয়। জনশ্রুকি আছে ভারতেও উজ্জল একটি হিন্দু মেয়েকে বিবাহ করে তাকে রেখে ২য় স্ত্রীকে নিয়ে দেশে এসে মাদক ব্যবসা শুরু করে। বড়দিয়া এলাকায় মাদকের বড় চালান তার মাধ্যমেই আসে। অত্র এলাকা মাদকমুক্ত করতে চরিত্রহীন, লম্পট, মাদক কারবারী ও মানব পাচারকারী উজ্জল বিশ্বাসের উপযুক্ত শাস্তি দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।