শফিকুল ইসলাম সাফা, চিতলমারী:
চিতলমারীতে করোনা মহামারীর কালে আশংকজনক হারে বাড়ছে বাল্য বিবাহ। ১৮মাস ধরে স্কুল বন্ধ থাকায় এ উপজেলায় ৪০৭ শিক্ষার্থীর বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মেয়েদের ঝড়ে পড়া সন্ববনা রয়েছে।এ উপজেলায় ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মোট ছাত্রী ৫৭৬৮ জন। এর মধ্যে ৪০৭ জন ছাত্রীর করোনা মহামরীর মধ্যে বাল্য বিয়ে হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কমবেশী বাল্য বিয়ের ঘটনা ঘটেছে। যাদের বিয়ে হয়েছে তারা সবাই অপ্রপ্ত বয়স্ক। এসব ছাত্রী সবাই সপ্তম ও দশম শ্রেনীতে পড়া লেখা করছিল।তবে এরমধ্যে ৫ম শ্রেনীর ছাত্রীরও বিবাহের ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানাযায়, করোনার দেড় বছরে চিতলমারী সরকারি এস,এম মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, চরবানিয়ারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১১, হাসিনা বেগম মাধ্যমিক বালিকাবিদ্যালয় ৩৫,বড়বাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫, চরডাকাতিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১,ডুমুরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০, সম, ইসাহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, চরবড়বাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯,বোয়ালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০, হিজলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮,সাবোখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১০, বড়গুনি মেহেরুন্নেছা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭, জি.ডি.বি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১২, রহমতপুর কলেজিয়েট স্কুল ১৯,সন্তোষপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪,ত্রি- পল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫, বড়বাড়িয়া জোনাব আলী ফ: মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যায় ৩৫,কালশিরা রাজেন্দ্র স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩১,সম্মলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১, খড়িয়া আড়–লিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮,মুক্ত বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪, স,ম, রকিবুজ্জামান মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৭,শান্তিখালি সবুজ সংঘ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৫, বাহির দশমহল মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ৯, বোয়ালিয়া শান্তিপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ৭,চরবানিয়ারী ইউনিয়ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ৬, কচুড়িয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭, নবপল্লী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৬, শৈলাদাহ এসইএসডিপি মডেল উ:বি ৯, গরীবপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২, পরানপুর শহীদ শেখ আবু নাসের মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩৫, নবপল্লী নিন্ম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ১৬ জন ছাত্রীর বাল্য বিয়ে হয়েছে।
বড়বাড়িয়া মৈজোড়া সরকাররি প্রথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা জানান, করোনামহামারীর মধ্যে স্কুল বন্ধের মধ্যে তার বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর একছাত্রীর বিয়ে হয়েগেছে। এরচেয়ে বেশী কিছু তিনি জানেন না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: মফিজুর রহমান জানান, সামাজিক নিরাপত্তা, করোনাকালিন স্কুল বন্ধের কারনে যোগাযোগ বিচ্ছন্নতা,মোবাইল ফোনের অবাধ ব্যাহারসহ নানা প্রতিবন্ধকতার জন্য বাল্যবিয়ের হার বাড়ছে।আবার অনেকে প্রেমের সম্পর্কে অভিভাবককে না জানিয়ে বিয়ে করেছে। তবে বাল্য বিয়ের শিকার ছাত্রীরা কমবেশি বিদ্যালয় আসা- যাওয়া করছে । সবাই যাতে বিদ্যালয় সম্পৃক্ত থাকে বা আসতে পারে সে বিষয় অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতা মুলক কাজ চলছে।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: লিটন আলী নবধারা কে বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে উপজেলা প্রশাসন সবসময়ই কঠোর রয়েছে। করোনার দেড় বছরে ২৪টি বাল্যবিয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে বন্ধ করা হয়েছে।এসময় জরিমানার পাশপাশি মুচলেকা নিয়েছি। বাল্যবিয়ে ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন কঠোর আবস্থানে রয়েছে।