মোঃ জিহাদুল ইসলাম, নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী ৮ জন। গুটি কয়েক নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী ও ইউনিয়নবাসীর দাবী দলীয় ভাবমুর্তি ধরে রাখতে গত বারের ভূলকে শুধরে এবার এমন একজনকে নৌকার মাঝি মনোনীত করা হোক, যাকে ইউনিয়নবাসী চায় এবং সর্বদা কাছে পায়। এরই ধরাবাহিকতায় গণসংযোগ করে ইউনিয়নব্যপী চষে বেড়াচ্ছেন দুই নৌকা প্রত্যাশী সেলিম সিকদার ও বাইজিদ মোল্যা।
ইতিমধ্যে জনগণের আস্থাও কুড়িয়েছেন বেশ। এলাকা ঘুরে জানা যায়, ধর্মীয়, সামাজিক, সাংগঠনিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিভিন্ন পদে থাকায় এবং এলাকায় থেকে বলিষ্ট ভূমিকা রাখায় এলাকাবাসীর অনেকটা কাছেই রয়েছেন এ দু’জন। সচেতন ইউনিয়নবাসী জানান, কোন বসন্তের কোকিলকে আমরা চাইনা। সর্বাবস্থায় যাদের আমরা পাশে পাই তাদের যে কেউকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার দাবিও আমরা জানাই। কারণ স্থাণীয় সরকার নির্বাচনে চেয়ারম্যানের গুরুত্ব অপরিসীম। নির্বাচিতকে অব্যশ্যই এলাকায় থাকতে হবে, নতুবা আমাদের ভোগান্তি তথা ইউনিয়নের উন্নয়নের কোন আশা নাই। টাকার বিনিময়ে অযোগ্য প্রার্থী নির্বাচীত হলে ইউনিয়নবাসী তাকে বয়কট করবে বলেও মন্তব্য করেন। প্রয়োজনে তদন্তপূর্বক তৃনমূল ও ইউনিয়নবাসীর চাহিদার প্রার্থী বাছাই করে তাকে নৌকা প্রতীক বরাদ্ধ দেওয়া হোক। এ বিষয়ে হাইকমান্ডকে সঠিক সিদ্ধান্তে আসার অনুরোধ করেন তারা।
ইউনিয়নবাসী আরো জানায়, নৌকার নমিনেশনে দৌড়ঝাপে যে সকল প্রার্থীরা এগিয়ে তারা প্রায় সকলেই পরিবার পরিজন নিয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। প্রশ্ন ঢাকায় থেকেও কেন আপনারা চেয়াম্যান হতে চান? প্রার্থী নির্বাচনে হাইকমান্ড ভুল করলে তার খেসারত দলকেই দিতে হবে বলে সচেতন মহল মন্তব্য করেন। নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি করে আসা উচ্চশিক্ষিত পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ বাইজিদ মোল্যা ও পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মোঃ সেলিম সিকদার একই সুরে বলেন, ভুল সিদ্ধান্তের কারণে বিগত নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নিকট বিপুল ভোটে পরাজিত হতে হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় প্রতীকের মাধ্যমে স্থাণীয় নির্বাচন ঘোষনা করায় আমরা যারা তৃনমূলের নেতা কর্মীরা সক্রীয় রাজনীতিতে আছি, তাদের কেউ নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারলে ইউনিয়নটিকে সুন্দরভাবে ঢেলে সাজাতে পারবো। কেননা আমরা এলাকায় থাকি ইউনিয়নের প্রত্যেকটা জায়গায় বিচরণ করি এবং সমস্যা চিহ্নিত করে ইউনিয়নের উন্নয়ন করতে সহজ হবে। আমরা চাই জননেত্রী শেখ হাসিনা, জেলা আওয়ামীলীগ, থানা আওয়ামীলীগ তদন্তের মাধ্যমে যাদের স্থাণীয় পর্যায়ে গ্রহনযোগ্যতা আছে, তৃনমূল পর্যায়ে যাদের কর্মকান্ড সঠিকভাবে আছে তাদের যেন নৌকা প্রতীকটা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এটা জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ কেন্দ্রী কমান্ড এবং জেলা ও থানা আওয়ামীলীগের কাছে আমাদের দাবি। নৌকা প্রত্যাশী অনেক প্রার্থীই আছেন, যারা কর্ম ও ব্যবসায়ীক কারণে রাজধানীতে থাকেন। একজন জনপ্রতিনিধির এলাকায় থাকার প্রয়োজন, যাতে ইউনিয়নবাসী রাতের আঁধারে ডাকলেও তাকে কাছে পায়। আওয়ামীলীগের পরীক্ষিত সৈনিককে যদি নৌকা প্রতীক দেওয়া হয় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর ভিষন গ্রাম হবে শহর বাস্তবায়ন তরান্বিত হবে ইনশাল্লাহ। দলের দুর্দিনে আমরা পাশে থেকে আন্দোলন করেছি, ৫ জানুয়ারী নির্বাচনে বিএনপি-জামাত যখন তান্ডব করেছিল সেটা আমরা মাঠে থেকে প্রতিহত করেছি। সুতরাং প্রার্থী নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কমান্ডকে স্থাণীয় গ্রহনযোগ্যতা ও তৃনমূলের কর্মকান্ড, সর্বপরি ইউনিয়নবাসীর চাহিদা যাচাইপূর্বক সিদ্ধান্ত গ্রহনের অনুরােধ জানাচ্ছি। বিগত নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার নৌকা প্রতীক পেলে বিগত ভূলগুলো শুধরে জয়ী হবো ইনশাল্লাহ। এলাকায় তার যথেষ্ট জনপ্রিয়তা আছে বলে তিনি জানান।
আহসান আলী সিকদার (লাবু) কে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে মতামত জানতে চাইলে ঢাকায় ব্যস্ত আছের বলে এড়িয়ে যান। কবে নাগাদ এলাকায় ফিরবেন জানতে চাইলে সেটাও নিশ্চিত করেননি তিনি। একই অবস্থা নৌকা প্রত্যাশী বরকত সিকদার, ইয়ার আলী শিকদার ও নির্মল মন্ডলের। তাদের কাছে বার বার ফোন করেও তাদের কোন মতামত পাওয়া যায়নি। এলাকায় থাকলেও বিভিন্ন ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে গেছেন।
বর্তমান চেয়াম্যান মোর্কারম হোসেন হিরু জানান, বিগত নির্বাচনে আমি বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে বিপুল ভোটে জয়লাভ করি। আমি আওয়ামীলীগ পরিবারের সন্তান। ইউনিয়নবাসী আমাকে চায় সে প্রমান আমি দেখিয়েছি। তবে এবার নির্বাচনে দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে নৌকা প্রতীক দেয় তাহলে নির্বাচন করবো।