নড়াইলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের ভালো ফলন হওয়ায় খুশি হাজারো কৃষক। ‘অশনি’ ঝড় কৃষকদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিলেও এর প্রভাব নড়াইলে তেমন একটা পড়েনি। তাই পাঁকা ধান পুরোদমে কাটা শুরু করেছেন কৃষকেরা। খাদ্যশষ্যে উদ্বৃত্ত নড়াইল জেলায় গত বছরের তুলনায় চাষাবাদ যেমন বেড়েছে, তেমনি ফলনও ভালো হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা সহজে সোনালি ধান ঘরে তুলতে পারবেন, এমন প্রত্যাশা সবার। কৃষি অফিস বলছে, এ বছর নড়াইল জেলায় ৪৮ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৪৯ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে। প্রণোদনার আওতায় কৃষকেরা বিনামূল্যে সার ও বীজ পাওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। মানভেদে বর্তমানে প্রতিমণ বোরো ধান বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১২০০ টাকায়। ধানের দাম সন্তোষজনক হওয়ায় খুশি কৃষকেরা।
নড়াইল পৌর এলাকার দুর্গাপুরের মিজানুর রহমান বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি ১৮ শতক জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ করেছি। সার, ওষুধ ও পানি ঠিকমত পেয়েছি। এই জমিতে ১২মণ ধান পাওয়ার আশা করছেন তিনি। নড়াইল সদর উপজেলার সরসপুর গ্রামের রাজামিয়া বলেন, আমার দু’টি স্যালো মেশিনে প্রায় ১৭ একর জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছে। প্রতিটি জমিতে ধানের ফলন ভালো হয়েছে।
একই গ্রামের নাজিম উদ্দিন জানান, ৫০ শতক জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করেছেন। হাটবাজারে নতুন ধান বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতিমণ ধানের বর্তমান বাজারমূল্য ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা। কৃষক সুকুমার অধিকারী বলেন, প্রায় দুই একর ২২ শতক জমি বর্গা দিয়েছি। ধান খুব ভালো হয়েছে। সপ্তাহখানেক পরে ধানকাটা শুরু হবে। স্যালো মেশিন মালিক মিজান জানান, দুই একর ২২ শতক জমিতে ধান চাষাবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৭২ শতক জমি নিজের। সারের কোনো ঘাটতি হয়নি। ধানের ফলন যেমন ভালো, দামও বেশ। লোহাগড়া উপজেলার কয়েকজন কৃষক জানান, পদ্মবিলা বিলে গত ১০ এপ্রিল থেকে ধানকাটা শুরু করেছেন তারা। তবে ঈদের পরে বেশির ভাগ জমির ধানকাটা শুরু হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় নবধারা কে বলেন, খাদ্যশষ্যে উদ্বৃত্ত নড়াইল জেলায় এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। সময় মতো বীজ, সারসহ অন্যান্য উপকরণ ঠিক মতো পাওয়ায় ধান চাষে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি। এছাড়া প্রণোদনার আওতায় নয় হাজার কৃষককে হাইব্রিড এবং ছয় হাজার কৃষককে উফশী জাতের বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে দামও ভালো পাওয়ায় কৃষকেরা ধান চাষে ঝুকেছেন। এ পর্যন্ত ৬০ ভাগের বেশি জমির ধান কাটা হয়েছে। অশনির প্রভাবে নড়াইলে তেমন একটা সমস্যা হয়নি।

                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    