নাজিরপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ
রিক্ত শীতের পরেই ঋতুরাজ বসন্তের রাজকীয় আাবির্ভাব।জীর্ণ,জরা ঝরিয়ে দিয়ে নব যৌবনের বার্তাবহন করে নিয়ে আসেছে মধুমাস বসন্ত আজ।শীতপ আড়ষ্ট প্রকৃতি যেন বর্ণাঢ্য বর্ণমালা নিয়ে স্বাগত জানায় বসন্তকে।আজি দক্ষিণা দুয়ার খোলা, এসো হে এসো,হে আমার বসন্ত এসো।
গ্রীষ্ম,বর্ষা,শরৎ,হেমন্ত আর শীতের পরে যাদুর স্পর্শ নিয়ে আসছে বসন্ত আজ। কনকনে শীত তখন পালিয়ে যায়। গ্রীষ্মের প্রখরতা নেই, বর্ষার কলো মেঘ নেই,শরৎ হেমন্তের সুন্দর ভুবনের তুলনায় বসন্ত তুমি বিজয়ী।বসন্ত এসেছে তাই গাছ গাছে সবুজ পাতার সমারোহ।বাতাবী লেবুর ফুল আর আম্র মুকুলের গন্ধ বাহী পাগল পারা বাতাস,মৌমাছির গুঞ্জন,কবির মনের জাগে ছন্দ আর গায়কের মনে জাগে গান, কোকিলের কুহুরব প্রকৃতিকে ডাক দেয় অফুরন্ত আনন্দের প্রাণ প্রাচুর্যে।
তাইতো কবির ভাষায়- ফুলের বনে ফুল ফুটেছে কোকিল গাহে তায় কিরণ কোলে লহর দোলে সলিল বয়ে যায়।শীতের ধূসর প্রকৃতি একটি নতুন দিনের ইশারায় যে পোষাক দিচ্ছে তা স্পষ্ট ধরা পড়ে।আম জাম কাঁঠালের বনে মুকুলের সুঘ্রাণ,মৌমৌ মধুমাছি ব্যাকুল হয়ে বনে বনে ছুটে বেড়ায়। প্রকৃতির এই ঐশ্বর্য ঋতুরাজ বসন্তেরই দান।
মানুষের জীবনেও সেই নতুন পাতার আহবান নতুন দুয়ার খুলে দেয়।কোথায় যেন নিয়ে যায় মোহন বাঁশির সুরে।শিমুল পলাশ কৃষ্ণচুড়া বাংলার পথে ঘাটে প্রান্তরে শোভা বর্ধন করে।দুর বন বনান্ত রক্তিম আভাস ছড়িয়ে জীবন সংগ্রামের কথা মনে করিয়ে দেয়।জীবন মানেই তো যুদ্ধ।প্রতি ক্ষণে ক্ষণে আমরা শিমুল পলাশের রক্তিম পাতায় ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদদের স্বরণ করি।তাঁদের স্মৃতি আমাদের এগিয়ে নেয় প্রতিটি নতুন দিনে।তারা জীবন দিয়ে আমাদের জীবনে দিয়ে গেছে এই বসন্ত।তাই তাদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।তবে শেষ কোনো দিনও শেষ নয়।শুরু হয় নতুন দিনের।ঋতুরাজ বসন্ত তার বিপুল সৌন্দর্য,তার স্বভাব এবং প্রাণ প্রাচুর্যের মধ্যেও বেদনার রেশ রেঁখে সূচনা করে যায় নতুন দিনের।আসে নববর্ষ।
বসন্ত তাই রাজ মহিমায় মহিমান্বিত।তাই বসন্ত ঋতুরাজ।রবি ঠাকুরের সেই কবিতার মতো,গোলাপ ফুল ফুটিয়ে আছে,মধুপ,হোথা যাস নে-ফুলের মধু লুটিতে গিয়ে কাঁটার ঘা খাস নে।ভালোবাসার এ সময়ে প্রেমিক যুগল শুনবে কেন সে কথা?সেই ভ্রমরের মতোই হয়তো তারা বলবে, মরমে যাহা গোপন আছে গোলাপে তাহা বলিব-বলিতে যদি জ্বলিতে হয় কাঁটারই ঘায়ে জ্বলিব।