নড়াইল সদর উপজেলার নাকসী-মাদ্রাসা বাজার থেকে টিসিবির প্রায় ৭৮ কেজি ডাল ও ৫০ কেজি চিনি আটক করেছে জনতা। অভিযোগ উঠেছে আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের দুজন সদস্য এসব পণ্য বিক্রির জন্য ভ্যানভোগে অন্যত্র পাঠাচ্ছিলেন। শনিবার সন্ধ্যার পর নাকসী-মাদ্রাসা বাজার থেকে ভ্যানে নেয়ার সময় এসব পণ্যগুলি আটক করে স্থানীয় জনতা। নড়াইল জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী নাকসী গ্রামের মশিয়ার সিকদার জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি ভ্যানযোগে চিনি ও ডাল নিয়ে যাচ্ছিলো। বস্তার গায়ে টিসিবি লেখা দেখে সন্দেহ হয়। তখন ভ্যান চালক তুহিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় যে, নাকসী বাজারের মুদি দোকানদার জহির শেখ এসব মাল ভ্যানে করে নাকসী বাসষ্টান্ডের দিকে নিয়ে যেতে বলেছে। তাই ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছেন তিনি। অপরদিকে প্রত্যক্ষদর্শী বিপ্লব মোল্যা জানান, আটককৃত টিসিবির পণ্যের মধ্যে ছিলো এক বস্তায় ৫০ কেজি চিনি এবং কয়েকটি প্যাকেটে ৭৮ দশমিক ৭০০ কেজি ডাল। ডাল কেজি হিসেবে প্যাকেট করা থাকলেও কেউ যাতে টিসিবির পণ্য টের না পায় সে জন্য বেশ কিছু প্যাকেট কেটে বস্তায় ভরে রাখা হয়েছিলো। অভিযুক্ত দুই মেম্বর সরাসরি না এসে বাজারের মুদি দোকানদার জহির শেখকে দিয়ে এসব পণ্য সরিয়ে নিচ্ছিলো। মুদি দোকানদার জহির শেখ বলেন, ‘আউড়িয়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের (নাকসী, খলিশাখালী ও ঘোষপাড়া) মেম্বর আব্বাস আলী ও ৬নং ওয়ার্ডের (রঘুনাথপুর) মিজানুর রহমান চিনি ও ডাল নাকসী বাসস্টান্ডের দিকে নেয়ার জন্য ভ্যান ডেকে দিতে বলে। সে কারণে ভ্যান পাঠিয়ে এসব পন্য আনা হয়। তবে এসব টিসিবির পণ্য আমার জানা ছিলো না।’ এব্যাপারে ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান জানান, টিসিবির পণ্য বিক্রির পর কিছু চিনি ও ডাল ছিলো। সেগুলি ভ্যানে করে অন্য জায়গায় রাখার জন্য নেয়া হচ্ছিলো।
প্যাকেটগুলি কাটার ব্যাপারে তিনি দাবি করেন, কিছু প্যাকেট ছেড়া ছিলো। ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্বাস আলী বলেন, ‘ কিছু চিনি ও ডাল গাড়িতে ছিলো। পরে তা ইউনিয়ন পরিষদের সিড়িতে রেখে দিয়েছিলো। এসব মাল কে নিয়ে যাচ্ছিলো আমার জানা নেই। ওই সময়ে আমি বাজারের মধ্যে কাজে ছিলাম। ’ এ প্রসঙ্গে আউড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম পলাশ বলেন, ‘ শনিবার আমি সারাদিন উপস্থিত থেকে টিসিবির পণ্য কার্ডধারীদের মধ্যে সুলভ মুল্যে বিক্রি করেছি। বিকালে শোক দিবসের কর্মসূচিতে চলে গিয়েছিলাম। পরে জানতে পারি কিছু চিনি ও ডাল আটক করেছে জনগণ। আমার পরিষদের যেই অন্যায় করুক আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই।
এব্যাপারে সদর থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ খবর শোনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। আটককৃত পন্য জব্দ তালিকা করে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে।’ এব্যাপারে তথ্য জানতে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ফকরুল হাসান ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলামকে ফোন দিলে কেটে দেন।