নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামে আনিস শেখ (৩২) নামে এক যুবক কে কুপিয়ে হত্যা করে দুবৃত্তরা। এরপর হত্যাকান্ডে জেরে তিন দফায় আসামিপক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
গত ২৭ জুন রাতে দুইটি ঘেরের মাছসহ প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৮জুন) বিকালে ঘের মালিক মারুফ শেখ বলেন,প্রতিপক্ষ হওয়ায় আনিস হত্যাকান্ডে অনেক নিরীহ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। আনিসের ভাই সোহেল শেখের নেতৃত্বে দফায় দফায় আসামি পক্ষের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও মালামাল লুটপাট করা হয়েছে।
আসামি পক্ষের লোকজন ভয়ে বাড়ি উঠতে পারছে না। হত্যাকান্ডের পরদিন রাতে প্রথম দফায় ৬টি এবং এক সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় দফায় আসামি পক্ষের ১০টি ঘর-বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
সর্বশেষ গত ২৭ জুন রাতে তৃতীয় দফায় আসামি পক্ষের দুইটি ঘের থেকে ৭টি ছ্যালো মেশিন, একটি সেচ মটর এবং বিপুল পরিমাণে মাছ মেরে নিয়ে গেছে। কলাবাড়িয়া গ্রামের গৃহবধূ হাসিনা বেগম বলেন, আনিস হত্যার পরে তার ভাইয়ের নেতৃত্বে আমাগের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে ৫টা গরু ও নিয়ে গেছে। এখনও হুমকি-ধামকি দিচ্ছে, আমরা আতঙ্কে আছি, বাড়িঘরে থাকতে পারতেছি না। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হত্যাকান্ডে শিকার আনিস শেখর বড় ভাই কলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য সোহেল শেখ। ভাঙচুর, লুটপাট এবং হুমকি-ধামকির ব্যাপারে তিনি বলেন,শুরুতে ছেলে পেলে একটু করছিল। আমি এসবের পক্ষে না। আমি কাউকে এসব করতে দেয়নি। অভিযোগকারিদের কথা সত্য না। আনিস হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নড়াগাতি থানার সাব ইন্সপেক্টর সুমন বিশ্বাস বলেন,আনিস শেখ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব মোট ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে৷ তারা সকলেই কারাগারে রয়েছেন। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নড়াগাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,ঘেরের মাছ লুটের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পাঠিয়ে ছিলাম। এ ব্যাপারে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই এলাকার পরিবেশ এখন শান্ত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কাজ করছে। উল্লেখ্য কলাবাড়িয়া গ্রামে গত ৩১ মে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই গ্রামের মোশারফে হোসেনের ছেলে আনিস শেখ কে দুবৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সোহেল শেখ বাদি হয়ে উপজেলার নড়াগাতি থানায় ৩১ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার পরপর দুইজন কে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পরে ১০ জুন রাতে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে প্রধান আসামি জাহিদুল শেখসহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।