সোহেল রানা বাবু/আয়শা সিদ্দিকা, কচুয়া
খুলনায় গতকাল শুক্রবার বিকালে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামীর মরদেহ শনিবার বিকেলে তার গ্রামের বাড়ী বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার মালিপাটন গ্রামে পৌছালে স্বজনদের কান্নায় পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
নিহত সুমনের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা সুশীল কুমার ঘরামী একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এসময়ে সুমনের মা গীতা রানী ঘরামী ছেলের ছবি জড়িয়ে ধরে বার-বার বলতে থাকেন ‘তোমরা কি বন্দুক আনছো, হেইলে কও, ওই বন্দুকটা দিয়া আমার বুকটার ওপর একটা গুলি করো। আমি আমার বাবার লগে চইলে যাব’। এসব কথা বলে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিলেন তিনি। নিহত সুমন ঘরামীর একমাত্র ৬ বছরের মেয়ে স্নিগ্ধা ঘরামীর আর্তনাদে উপস্থিত লোকজন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।
এসময়ে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। স্বজনেরা নিহতের স্ত্রী, ছয় বছরের একমাত্র মেয়ে সিগ্ধা, বাবা মুক্তিযোদ্ধা সুশীল কুমার ঘরামী, মা গীতা রানী ঘরামীসহ স্বজনদের সান্তনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেন। পরে বৃষ্টি উপেক্ষা হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে গ্রামের বাড়ীতেই ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা ও পুলিশের গান সেলুটের মধ্যদিয়ে সমাহিত করা হয় নিহত পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামী মরদেহ।
নিহত পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের মালিপাটন গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সুশীল কুমার ঘরামির ছেলে। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে (কেএমপি) কর্মরত সুমন তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র মেয়ে স্নিগ্ধা ঘরামীকে নিয়ে খুলনা মহানগরীর পূজাখোলা এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
তিনি খুলনা মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনারের (সোনাডাঙ্গা জোন) দেহরক্ষী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। খুলনায় শুক্রবার বিকালে দায়িত্ব পালনকালে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের হাতে নিহত হন পুলিশ কনস্টেবল সুমন কুমার ঘরামী।