ভেবেছিলাম পরিবর্তিত বাংলাদেশে আজ বর্ষবরণ হচ্ছে এ নিয়ে কিছু লিখবো না। আমার উপরে চাপ ক্রমশ বাড়ছে। জানি না কখন ——– । তবুও হাত মিশমিশ করছে। তাই একটু লেখার ইচ্ছে কে দমন করতে ইচ্ছার কাছে পরাজিত হলাম।
বর্ষবরণ উৎসব ও শোভাযাত্রা করা নাজায়েজ এ বছর একবার ও শুনতে পেলাম না। বিভিন্ন মুর্তি পেঁচা এসব নিয়ে শোভাযাত্রা করা পাপ,শিরক, এগুলো হিন্দুদের কালচার। এ কথা গুলো এবার শুনতে পেলাম না। ধর্মীর ব্যাখ্যা বদলে গেল একটি মুর্তির প্রদর্শিত হবে শুধু এই কারনে। সেটা ১৫ বছর ভোটবিহীন জোর করে ক্ষমতায় থাকা, পারিবারিক ও আত্মীয়-স্বজন, দলীয় নেতাদের এবং প্রসাশনের আমলাদের মহা লুটপাটের সহযোগিতা করে চোখ বন্ধ করে থাকা একজন রাষ্ট্রনায়ক অন্যদিকে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, মহাউন্নয়ন ও সমৃদ্ধি ও বদলে যাওয়া বাংলাদেশের একজন মুল কারিগর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুর্তি প্রদর্শন হবে শোভাযাত্রায় এই কারনে। এটি আজ এমন একটি বাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়ে থাকলো যা ভবিষ্যতে ও এর পুনরাবৃত্তি হবে। আজ পর্যন্ত এটি ছিল সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ও বাঙালিদের একটি প্রাণের উৎসব। ভবিষ্যতে যখনি ক্ষমতার পালাবদল হবে সে রাজার ইচ্ছে মাফিক সেদিন ও কাউকে কাউকে দানব কাউকে রাক্ষস বানানো হবে। আর সেই মুর্তি চাপিয়ে দেওয়া হবে সার্বজনীন এ শোভাযাত্রায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে আজ যেমন শেখ হাসিনা কে দানব বানিয়ৈ শোভাযাত্রা প্রদর্শন সমর্থন করছি না ভবিষ্যতে অন্য কোন রাষ্ট্রনায়কের দানবীয় মুর্তি নিয়ে শোভাযাত্রার বিরোধীতা করবো। অনেক তো হলো এবারের নববর্ষে শুধু একটাই প্রার্থনা – হে মঙ্গলময়ী আমাদের মন থেকে বিদ্বেষ বিষ নাশো।
সার্বজনীন প্রাণের এই বর্ষবরণ উৎসব ৩০ বছরের বেশি সময় পালন করেছি প্রতিক্রিয়াশীলদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে। মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করতে গিয়ে এমন হুমকি পেয়েছি, গরু যেভাবে জবাই করে ওভাবে আমাকে জবাই করবে।ভয় পাইনি। একবার এরকম চাপের মুখে একজন জেলা প্রশাসক ও ইউএনও আমাকে অভয় দিয়ে বলেছিলেন ভাই পাশে আছি, কতো গুলি করতে হবে করবো, তবুও আপনার অনুষ্ঠান হবে।প্রগতিশীলদের হাত থেকে বাঙ্গালীর সার্বজনীন এ উৎসব আজ চুরি হয়ে গেল।হালাল অথবা জায়েজ করতে মঙ্গল হয়ে গেল আনন্দ। আমার ও এই প্রথম বার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান পালনের প্রাণের টান আর অনুভব করলাম না। মঙ্গল শব্দটি হিন্দুদের নাম এই অযুহাতে যদি মঙ্গল আনন্দ হয়ে যায়, তাহলে আমার প্রশ্ন – একজন সনাতনী ছেলে মেয়ে কেন এই উৎসবে অংশগ্রহণ করবে ? এরপর ও করবে কিছু বেহায়া টাইপ সাংস্কৃতিক কর্মী আছে সব সংগঠনে। তারা যে অনুষ্ঠানে ঢোল পিটিয়ে তার মায়ের নাক চুল কাটা হবে সেখানে ও সে নাচতে যাবে।
আমি মদ খেতে ভীষণ পছন্দ করি। যদি আরো কিছু বছর বেঁচে থাকি এটা ও হয়তো বৈধতার মোড়কে প্রকাশ হয়। শুধু আফসোস হবে হয়তো এই ভেবে – । আমি ও বিধবা হলাম আর দেশে এসেছে রঙিন কাপড়।
১৪-০৪-২০২৫
ম, হাসান
গোপালগঞ্জ