নীলকন্ঠ বাকচী, বিশেষ প্রতিবেদক
গোপালগঞ্জ টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা মুন্সীরচর গ্রামের রিপোর্টার পুত্র আরমান শেখ এর নৃশংস হত্যাকান্ডের রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বেশ কয়েকদিন অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হননি। আরমান শেখ যে ইজিবাইক চালাতেন সেটিও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে রিপোর্টার তপু শেখ ও তার পরিবার কে হুমকি ধামকি দেওয়া হয়েছে। তপু শেখ ও তার জীবনের অনিরাপত্তায় বাইরে রাত কাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে তিনি টুঙ্গিপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডাইরী লিপিবদ্ধ করেছেন বলে থানা সুত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, কয়েকমাস ধরে একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র মেয়েদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করে প্রেমের ফাঁদ চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে। কখনো কখনো এদের কেউ কেউ পুলিশের হাতে আটক ও হয়েছে। ভয়ানক এই চক্রটি সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে যুবকদের প্রেমের জালে ফাসিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। টাকা দিতে অস্বীকার করলে ফোন মানিব্যাগ হাতিয়ে নিয়ে নির্মমভাবে মারধর করে ফেলে রেখে চলে যায়।
এ চক্রের বেশীরভাগ সদস্যদের বাড়ী টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা মুন্সীরচর, মল্লিকমাঠ, শ্রীরামকান্দি, গিমাডাঙ্গা বিশ্বাস বাড়ী ও জিটি স্কুল এলাকায়।এরা বেশ খানিকটা সঙ্গবদ্ধ ও পারিবারিক প্রভাবশালী। এছাড়া ও রয়েছে কিশোর গ্যাং এর দৌরত্ব। এদের বেশিরভাগ সদস্যদের ই জিটি স্কুল ও সংলগ্ন গার্লস স্কুল এর মেইন গেট এলাকায় দেখা যায়।
এছাড়া ও রয়েছে শক্তিশালী মাদক চক্র।
নবধারার গভীর অনুসন্ধানে পাওয়া যায়,এসব চক্রের সদস্যরা আরমান শেখের ইজিবাইক টি ভাড়ায় ব্যবহার করতেন। সেক্ষেত্রে চালক হিসেবে তারা সরল আরমান শেখ কে নিয়ে যেতেন।তাই সংগত কারণেই তাদের সকল গোপনীয় কাজকর্ম জানতেন আরমান শেখ। সব কিছু আরমান জেনে ফেলায় আর কাজ না করায় সব পুলিশের কাছে ফাঁস হবার ভয়ে কি হত্যা হলো আরমান শেখ? আরমানের মরদেহ উদ্ধার হবার পর তার মানিব্যাগ টি তার পকেটেই পাওয়া যায়। মানিব্যাগে ১২ শত টাকার বেশি পায় ক্রাইম সিনের পুলিশ সদস্যরা।
অপরাধ বিশেষজ্ঞদের ধারনা, যদি ইজিবাইক ছিনতাই করবার জন্য আরমান কে হত্যা করা হতো তাহলে তার মানিব্যাগ পকেটে থাকতো না। সে টাকাও তারা নিয়ে যেতো।
খুনের আরো একটি মোটিভ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আরমানের গলায় ফাঁস ও কাটা দাগ ছিল। এটা হতে ধারনা করা যেতে পারে, ওই চক্রটি আরমানের কন্ঠ রোধ করতে চেয়েছিল। তারা ব্যার্থ হয়ে তার কন্ঠ চিরতরে বন্ধ করে দেন। তাই গলায় ফাঁস ও শ্বাসরোধ করা হয়েছে। তাই যেখানে তাকে হত্যা করা হয়েছে তার পাশের নদীতে মিলতে পারে আরমানের ইজিবাইক টি।
এ বিষয়টি আরমানের পিতা সংবাদ কর্মী তপু শেখ জানতে পারলে ছেলেকে এসব কাজ হতে বিরত থাকতে বলেন। কখনো কখনো আরমান তার বাবার কথা শোনে কখনো আবার কম পরিশ্রমে বেশি টাকা পাওয়ার লোভে তাদের সাথে কাজ করেন।
এক পর্যায়ে ছেলে আরমান তার নিষেধ না শুনলে তিনি তাদের কে পুলিশ কে জানিয়ে দেবার হুমকি ও দেন।
তপু শেখ বলেন, এঘটনা সত্যি আমার ছেলে আরমান তাদেরকে ইজিবাইকে বহন করত। তবে আমি তাদেরকে ভালো করে চিনি না। তারাই যে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে কিনা এ বিষয়ে আমার ধারনা নেই
এদিকে গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তাগন ,টুঙ্গিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ ও তদন্ত কর্মকর্তা বেশ কয়েকবার আরমানের বাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
টুঙ্গিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার আমিনুর রহমান বলেন, মামলার বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আমরা এখনই এসব প্রকাশ করছি না। তিন চার দিনের মধ্যেই একটি ভালো ফলাফল হয়তো জানাতে পারবো।
আমরা চাই খুনি ধরা পড়ুক নিরপরাধ মানুষ মুক্তি পাক