ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঝিনাইদহ জেলা শহরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার একটি অংশ জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতার বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায় বলে জানা গেছে।
ঘটনার মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস এবং ঝিনাইদহ সদর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মাসুমের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া কনক কান্তি দাসের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ওসমান হাদীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে গভীর রাতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের শেরে বাংলা সড়কের হামদহ এলাকায় পৌঁছালে কনক কান্তি দাসের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে বাড়ির সামনের অংশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
কনক কান্তি দাসের বাড়িতে অবস্থানরত তার ভাই গোপাল কৃষ্ণ দাস জানান, রাত আনুমানিক ১২টার দিকে শতাধিক মানুষ বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে তারা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ভাঙচুর করে এবং কিছু সামগ্রী বাইরে এনে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় তিনি পেছনের দরজা দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ত্যাগ করেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এর কিছু সময় পর জেলা শহরের নতুন হাটখোলা সড়কের পাশে ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য, মিজানুর রহমান মাসুম পূর্বে ঝিনাইদহ সদর পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর কনক কান্তি দাস স্বপরিবারে আত্মগোপনে চলে যান এবং বর্তমানে তিনি ভারতের অবস্থান করছেন।
হামলা ও ভাঙচুরের খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন জানান, রাতের বিভিন্ন সময়ে কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভ মিছিলের ঘটনা ঘটে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বর্তমানে জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
