মোছা.কাবা কাকলি, কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধি
পুরান ঢাকার লক্ষীবাজারে অবস্থিত বাহাদুর শাহ পার্ক শুধু একটি সবুজ উদ্যান নয় এটি ঢাকা শহরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক জীবন্ত সাক্ষী। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহ শেষে বিদ্রোহের স্মৃতি জড়িত এই পার্কটি বিদ্রোহ শেষে সর্বশেষ মোগল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের নামে নামকরণ করা হয় এবং এটি নগরবাসীর জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
পার্কটিতে দুটি প্রবেশদ্বার আছে, পার্কের ভিতরে রয়েছে পাকা রাস্তা যা দর্শনার্থীদের হাঁটার সুবিধা দেয় এছাড়াও রয়েছে বিশ্রামের জন্য টাইলসের নির্মিত সুন্দর বসার জায়গা। পার্কে চারপাশে রয়েছে কবি নজরুল সরকারি কলেজ, ইসলামিয়া হাই স্কুল, সরকারি মুসলিম স্কুল, সেন্ট থমাস চার্চ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও বার কাউন্সিল সুপ্রিম কোর্ট। যা এই এলাকাটিকে শিক্ষাগত ও প্রশাসনিক দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
গ্রীষ্মের সকালে স্নিগ্ধ আলো আর গাছের পাতায় পাতায় খেলা করে রোদের সঙ্গে মৃদু বাতাস বয়। যেন বসন্ত বিদায় নেয়ার আগে প্রকৃতির এক শেষ উপহার। পার্কজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে হলুদ রঙ্গের ঝরাফুল, উপরে কৃষ্ণচূড়ার লাল আগুন আর কাঁঠালের পরিপক্কতা। প্রকৃতির এমন অপরূপ দৃশ্য যেন জানিয়ে দেয় এটি বিশেষ ঋতুর আগমনের কথা।
প্রতিদিন শত শত মানুষ এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন কেউ হার্টের কেউ বসে থাকেন ছায়া ঘেরা গাছের নিচে কেউ প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য ক্যামেরা বন্দী করে রাখেন। এমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শহরের বুকে থাকা এক ঐতিহাসিক স্থানে পাওয়া অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়। শহরের ব্যস্ততায় যখন নিঃশ্বাস নেওয়ার জায়গা নাই তখন বাহাদুর শাহ পার্ক হয়ে উঠেছে ঢাকাবাসীর কাছে নির্ভরতার জায়গা – প্রকৃতির ছোয়া ইতিহাসের গল্প আর মানবিক অনুভবের এক দুর্লভ মিলন।
কবি নজরুল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, যাওয়ার সময় হঠাৎ পার্কের কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলোর দিকে চোখ পড়েছিল। সত্যি বলতে, প্রায় বৃক্ষশূন্য এই শহরে এমন সৌন্দর্য দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছিলাম। এটি মনে এক ধরনের প্রশান্তি এনে দেয়।
একই কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মুন্না বলেন, আমি প্রায়ই এখানে আসি। এখানকার পরিবেশ শরীরচর্চা ও সময় কাটানোর জন্য খুবই উপযোগী। পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নানা রঙের ফুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
বাহদুর শাহ পার্ক শুধু ইতিহাসের স্মৃতি নয় ব্যস্ত নগরের প্রাণের বন্ধু ও বটে।