1. nabadhara@gmail.com : Nabadhara : Nabadhara ADMIN
  2. bayzidnews@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  3. bayzid.bd255@gmail.com : Bayzid Saad : Bayzid Saad
  4. mehadi.news@gmail.com : MEHADI HASAN : MEHADI HASAN
  5. jmitsolution24@gmail.com : support :
  6. mejbasupto@gmail.com : Mejba Rahman : Mejba Rahman
রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০৭:০০ অপরাহ্ন

র‍্যাব কর্মকর্তা পলাশ সাহার মৃত্যুতে শোকের ছায়া,অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন

 কোটালীপাড়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিতঃ বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০২৫
  • ৩৪০ জন নিউজটি পড়েছেন।
 কোটালীপাড়া প্রতিনিধি
তোরা আমার বাবার কাছে নিয়ে যা, আমি বাবাকে একটু ছুয়ে দেখি। কি অভিমানে বাবা আমাকে ছেড়ে চলে গেল। কথাগুলো বলছিলেন
চট্টগ্রামে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার হওয়া র‍্যাব কর্মকর্তা পলাশ সাহার (৩৭) মা আরতী সাহা। ছেলের কপালে চুমু খেয়ে প্রলাপ করছিলেন সন্তান হারা মা। সন্তানের শোকে তার চোখের পানি যেন শুকিয়ে গেছে।
এর আগে র‍্যাব-৬ এর কমান্ডিং কর্মকর্তা কমান্ডার শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে লাশবাহী ফ্রিজারে  করে নিহত পলাশের মরদেহ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তারাশী গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে বেলা পৌনে ১০ টায়। তাকে দেখতে সহপাঠী, প্রতিবেশি ও স্বজনরা ওই বাড়িতে ভিড় করে। এ সময় ওই বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্বজনের কান্নায় ও আহাজারিতে‌ শোকবাহ হয়ে ওঠে সাহা বাড়ির পরিবেশ।
গোপালগঞ্জ পয়সারহাট সড়কে কোটালীপাড়ার তাড়াশি বাস স্ট্যান্ড থেকে ৫০০ মিটার দক্ষিণে পলাশ সাহার বাড়ি। মেঝে পাকা চারচালা টিনের ঘরের সামনে বসে আর্তনাদ করে স্মৃতিচারণ করছেন বড় বোন রমা সাহা। পাশে মেজো ভাই নন্দলাল সাহা ও বড় ভাই লিটন সাহার স্ত্রী পাশে বসে আর্তনাদ করছিলো।
বেলা সাড়ে দশটা পর্যন্ত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পর শেষকৃত্যের জন্য পলাশের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় পৌরসভার পাড়কোনা মহাশ্মশানে। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার প্রদান এবং ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে দুপুরে সেখানে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
কথা হয় নিহত পলাশের মেজ ভাই নন্দলাল সাহা তিনি বলেন, তিন ভাই এক বোনের পলাশ ছিলেন সবার ছোট ও আদরের। কোটালীপাড়া থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।  সাব-রেজিস্ট্রি চাকরি জীবন শুরু করেন। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক , ৩৬ তম বিসিএস  শিক্ষা ক্যাডার ও ৩৭ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়। চাকরির জীবনে সে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশে দায়িত্ব পালন করেন। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে তাকে রেপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‌্যাবে-৭ দায়িত্ব পালন করেন।
দুই বছর আগে ফরিদপুর বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন চৌধুরীপাড়ায় সুস্মিতা সাহার সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের দুই মাস পর থেকেই শুরু হয় সংসারের অশান্তি।
 নন্দলাল সাহা আরো বলেন, পলাশ চেয়েছিল  মা‌ ও স্ত্রীকে নিয়ে একসঙ্গে থাকতে। কিন্তু তার স্ত্রী এটিকে ভালোভাবে মেনে নিতে পারছিল না। মা বাসায় না থাকতে চাইলে পলাশ কষ্ট পেত। বাসায় থাকলে স্ত্রী সহ্য করতে পারত না। এ নিয়েই মাঝে মাঝে ঝামেলা লেগে থাকতো। ভাই চলে গেল আমাদের সব‌কিছু শেষ হয়ে গেল।
আমি নিজেই ৩৬ তম বিসিএসে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলাম। যখন পলাশের একের পর এক চাকরি হচ্ছিল তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম আমি চাকরি করব না উদ্যোক্ত হবো। তাই ঢাকা ছেড়ে বাড়িতে চলে আসি। কিন্তু আদরের ছোট ভাই চলে গেল আর সংসারের সবাইকে সাগরে ভাসিয়ে গেল ।
বাল্য বন্ধু হাছান শেখ বলেন, পলাশ সাহা  আমার বাল্যবন্ধু ছিল। লেখাপড়ায় আমাদের  অত্যন্ত মেধা শিক্ষার্থী ছিল । বন্ধুদের সাথে আন্তরিকতার সাথে মেলামেশা করতো। তার অকাল মৃত্যু আমরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না। এটা অত্যন্ত দুঃখ জনক অসহনীয় বাস্তবতা।
প্রসঙ্গত, বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের নগরের চান্দগাঁও  র‍্যাব-৭ ক্যাম্পে অভিযানের প্রস্তুতি চলছিল। এ জন্য নিজের কক্ষে যায় পলাশ সাহা । এ সময় সহকর্মীরা গুলির শব্দ শুনে ছুটে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান তাঁকে। নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পলাশ আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করছে র‍্যাব কর্তৃপক্ষ। তাঁর রক্তাক্ত মরদেহের পাশেই পড়ে ছিল একটি চিরকুট। সেখানে তার মৃত্যুর জন্য নিজেই দায়ী বলে উল্লেখ করেন।
ওই চিরকুটে আরো উল্লেখ ছিলো, আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দেয় না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না। বউ যেন সব স্বর্ণ নিয়ে যায় এবং ভালো থাকে। মায়ের দায়িত্ব দুই ভাইয়ের উপর। তারা যেন মাকে ভালো রাখে। স্বর্ণ বাদে যা আছে তা মায়ের জন্য। দিদি যেন কো- অর্ডিনেট করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved সর্বস্বত্বঃ দেশ হাসান
Design & Developed By : JM IT SOLUTION