পিরোজপুরের নাজিরপুরে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন সংস্থায় চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে নাজিরপুর থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মোঃ আব্দুর রহমান (৪৪),ও মোঃ ফারুক হোসেন (৫১) নামের দুই প্রতারকে আটক করা হয়। আব্দুর রহমান ঝিনাইদাহ’র হরিনগর উপজেলার জোড়াদাহ ইউনিয়নের ভেড়াখালী গ্রামের মোঃ ইসলাম উদ্দিন মন্ডলের ছেলে এবং মোঃ ফারুক হোসেন(৫১) একই জেলার শৈলকুপা উপজেলায় কাচেরকোল ইউনিয়নের গোয়ালিয়া গ্রামের মোঃশামসুল বিশ্বাসের ছেলে।
নাজিরপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই প্রতারক চক্র উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচীবদের “হাঁস-মুরগী’র উপর প্রশিক্ষণ কর্মশালা’র”অনুমতি চেয়ে একটি চিঠি প্রদান করেন। উল্লেখিত চিঠিতে দেখা যায়,আমরা জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন সংস্থার মাধ্যমে হাঁস মুরগীর উন্নয়ন ধারা অব্যহত রাখতে ইউনিয়ন পর্যায়ে হাঁস মুরগী পালন কর্মসূচী চালু করার উদ্যোগ গ্রহন করেছি।এই প্রকল্প সুষ্ঠু ও সঠিক ভাবে পরিচালনা বা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহন করিয়াছি,প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে হাজার-হাজার হাঁস মুরগী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় এর ফলে দেশী ডিম ও মাংসের উপর ব্যপক প্রভাবের কারনে আমরা বিদেশী মুরগীর ও ডিমের প্রতি ঝুঁকে পড়েছি। আর সেই কারনে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।এমন প্রকল্প দেখিয়ে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-সচীবদেরকে চিঠি দিয়ে দুই দিনের প্রশিক্ষন কর্মশালা কার্যক্রম চালু করেছে, প্রতি ইউনিয়নে ১১ জন মাঠকর্মী ও ১ জন ইউনিয়ন সুপারভাইজার নিয়োগ দেওয়া হবে বলে,মাঠকর্মীদের বেতন ভাতা ৭ হাজার এবং সুপারভাইজারদের বেতন ৯ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে। গতকাল ১২ জুলাই বুধবার শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নে সচীব মোঃ মঞ্জুরুল ইসলামের সহযোগীতায় প্রশিক্ষন কর্মশালায় মাঠকর্মী ও সুপারভাইজারদের ২ শত টাকা করে টিএ ভাতা এবং দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়, এসময় প্রত্যেক মাঠকর্মী ও সুপারভাইজারদের কাছ থেকে নিয়োগ দেওয়ার নাম করে জনপ্রতি ২০-৩০ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নেয় ওই চক্র। ওই ইউনিয়নের একাধিক মেম্বারদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, সচীব মঞ্জুরুল ইসলাম এই প্রকল্প চক্রের সাথে যোগসাজসে উক্ত টাকা গ্রহন করেন। পরবর্তীতে একই উপজেলার সেখমাটিয়া ইউনিয়নে একই কর্মকান্ড সংগঠিত করাকালীন চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান চৌধুরী নান্নু ও শ্রীরামকাঠী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন বেপারী বিষয়টি বুঝতে পেরে নাজিরপুর থানায় যোগাযোগ করে তাদেরকে হাতে-নাতে ধরিয়ে দেয়।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রীরামকাঠী ইউনিয়নের ভুক্তভোগী রোজিনা আক্তার (৪০),সুপারভাইজার পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য নগদ ৩০ হাজার টাকা প্রদান করে এবং দোলা সিকদার (২৬) নামের আর এক প্রার্থী নগদ ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন।
এবিষয়ে ইউনিয়ন সচীব মঞ্জুরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে এড়িয়ে যান।
নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, সেখমাটিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সহযোগীতায় প্রতারক চক্রকে আমরা গ্রেফতার করতে স্বক্ষম হয়েছি, তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তারা কোন সদোত্তর দিতে পারেনি। প্রাথমিক ভাবে তাদেরকে প্রতারক ধারনা করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন থানায় এদের বিরুদ্ধে প্রতারনার মামলা রয়েছে, নাজিরপুর থানায় তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত প্রতারনার মামলা হচ্ছে এবং তাদেরকে কোর্টে সোপর্দ করা হবে।