সোনালি স্বপ্ন নিয়ে বাগেরহারে চিতলমারীতে টমেটো ক্ষেতে রাত-দিন পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণিরা। এ বছর এলাকার অধিকাংশ আবাদি-অনাবাদি জমিতে ব্যাপক ভাবে টমেটোর আবাদ করা হয়েছে। এটি চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। উপজেলা
কৃষি অফিস জানায়ন এবছর ৬০ কোটি টাকার টমেটো বিক্রির লক্ষমাত্রা ধায্য করা হয়েছে।
প্রতিকুল পরিবেশ ও বৈরী আবহাওয়ার সাথে সংগ্রাম করে এ বছর টমেটো চাষে সাফল্য এনেছেন তারা। বর্তমানে বাজার দর ভালো থাকায় বিগত বছরের লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখছেন অনেকে। এতে চাষিদের মধ্যে খুশির আমেজ ফিরে এসেছে। স্থানীয় কৃষি অফিস ও এলাকার চাষিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ আবাদি-অনাবাদি জমি ও চিংড়ি ঘেরের পাড়ে এ বছর ব্যাপক ভাবে টমেটোর চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেতে বাম্পার ফলন হয়েছে।
এছাড়া এ বছর বাজার দর ভালো থাকায় বিগত দিনের লোকসান কাটিয়ে চাষিরা লাভের মুখ দেখছেন। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন চিংড়ি ঘেরের পাড় জুড়ে দৃষ্টিনন্দন টমেটোগাছে প্রচুর ফলন ধরেছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের এ টমেটোর থোকায় নুইয়ে পড়েছে ডালপালা। সুরশাইল গ্রামের শান্তি রঞ্জনের পুত্র সজল মÐল, শ্যামপাড়া গ্রামের অসীম মÐলসহ অনেক চাষী জানান, এ বছর টমেটোর ফলন খুবই ভালো হয়েছে। বাজার দরও বেশ আশানুরূপ। বর্তমানে বাজারে কাঁচা টমেটোর ও ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এখানে টমেটো কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। প্রতিদিন দেশের নানা স্থানে ট্রাক যোগে চালান হচ্ছে এসব টমেটো।ঢাকার ব্যবসায়ী হারুন শেখ জানান, এ লাকার সবজি ও টমেটোর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে রাজধানীতে।
এসব টমেটো দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও পাঠানো হচ্ছে। বর্তমানে বাজার দর ভালো থাকায় চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। এখানকার টমেটো রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয়ে হচ্ছে। উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের শ্যামপাড়া গ্রামের নির্মল মÐল জানান, তিনি ১ বিঘা জমিতে টমেটো আবাদ করেছেন। এছাড়া অসিম মÐ ২ বিঘা, গীতা বৈরাগী ১৫ কাঠা জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। তারা জানান, এ বছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারও দর বেশ ভালো। অন্যন্যা বছর এ সময়টায় টমেটোর মণ ১২ শ’ থেকে ১৪ শ’ টাকা দরে মণ বিক্রি হত কিন্তু এবছর আশানুরূপ দাম পাওয়া যাচ্ছে ।
প্রতিমণ টমেটো ২ হাজার থেকে ২২ শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে চাষিরা ভালো দাম পেয়ে বেজায় খুশি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিফাত-আল- মারুফ জানান, এ বছর উপজেলায় মোট ৮ শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে হাইটম, বিজলী, লাভলী ও বিউটিফুলসহ ১৫টি জাতের উচ্চ ফলনশীল টমেটো আবাদ করা হয়েছে। এখানকার চাষিরা নানা প্রতিক‚ল আবহাওয়ার সাথে সংগ্রাম করে দারুণ টমেটো আবাদ করেছেন।
এ বছর বাজার দর ভালো থাকায় লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন তারা। ৬০ কোটি টাকার টমেটো বিক্রির লক্ষমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। সার্বিক ভাবে কৃষি অফিস থেকে চাষিদের পরামর্শ প্রদান ও খোঁজ-খবর রাখা হচ্ছে।