মোঃ মিজানুর রহমান,কালকিনি ডাসার প্রতিনিধিঃ
নেই দুবেলা দু’মুঠো আহারের বন্ধবস্ত। তার ওপরে নেই থাকার মতো কোন আশ্রয়। অগ্নীদগ্ধ হয়ে সারা শরীর পুড়ে যাওয়ায় বাঁকা হয়ে গেছে হাত তাই অন্যের বাড়িতে কাজ করারও সুযোগ নেই। আর অনেক আগেই পিতা মাতার মৃত্যুর পর ট্রাক চাঁপায় স্বামীর মৃত্যু হয়।
তার পরেও জীবন জীবীকার যুদ্ধে অবুঝ ২টি শিশু সন্তান নিয়ে বাঁচার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে রিজিয়া(৪০) নামের এক হতভাগী। বর্তমানে শুধু একটি পলিথিন বিছিয়ে দুই সন্তান মুছা (৫) ও রায়হান(১)কে নিয়ে বসবাস করছেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের বারান্দায়। তবে অফিস খোলা থাকলে সেই আশ্রয়টুকুও ছেরে রাস্তার পাশে থাকতে হয়। আর তার জীবনের দুঃখের বাস্তব কাহিনী শুনে যে কারো চোখের জল গড়িয়ে পরে। যা সিনেমার কাহিনীকেও হার মানায়।
তবে সংক্ষেপে তিনি তার জীবন কাহিনী শোনালে সেখান থেকে জানাযায়, গোপালগঞ্জের মোকশেদপুর উপজেলার ঠাকুর বাড়ি গ্রামের খালেক মিয়ার মেয়ে সে। ছোট বেলায় মায়ের মৃত্যুর পর পিতা ফের বিয়ে করে আর সহায় সম্বল হিসেবে থাকা পৈর্তৃক ভিটা টুকুও লিখিয়ে নেয় সৎ মা। পরে পিতার মৃত্যুর পর তার বিয়ে হয় আব্দুল মালেক নামের এক অটোচালকের সাথে। স্বামীর সাথে সংসার ভালই চলছিল তার। কিন্তু একদিন ট্রাকের চাঁপায় স্বামীর মৃত্যুর পর দুঃখের অথৈ সাগরে নিমর্জ্জিত হয় বিধবা রিজিয়া। দুই সন্তান নিয়ে রাস্তার পাশে খুপড়ি ঘর বানিয়ে বসবাস করছিলেন তিনি। তবে বিধিবাম খুপড়ি ঘরের পাশে থাকা চুলা থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় সেই ঘরে আগুন লেগে যায়। দুই সন্তান রক্ষা পেলেও সারা শরীর পুড়ে যায় অভাগিনী রিজিয়ার। সেই সাথে হাত দুটিও বাঁকা হয়ে যায়। জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠলে কয়েক বার আত্মহত্যাও করার চেষ্টা করে সে। কিন্তু দুটি মাছুম বাচ্চার কথা ভেবে সেই পথ থেকে সড়েও আসেন। তবে বর্তমানে দু’মুঠো ভাত আর একটু আশ্রয়ের জন্য ছুটে বেড়াচ্ছেন বলেই হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন। সাথে কান্না জুড়ে দেয় সেই অবুঝ শিশু ২টিও।