আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলায় দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে দেশি জাতের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বিতরণ করা হয়েছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করে আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল। প্রধান অতিথি ছিলেন ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ. কে. এম. আসজাদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফরিদপুর কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের উপপরিচালক ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ভবেন বাইন।
কর্মসূচির আওতায় উপজেলার চরাঞ্চলের ৯২ জন সুফলভোগীর মাঝে ৯২ জোড়া দেশি জাতের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বিতরণ করা হয়।
ছাগল পেয়ে উপকৃত নারীদের মুখে ফুটে ওঠে আনন্দের হাসি। চর কাতলাসুর গ্রামের সুফলভোগী রোকসানা বেগম বলেন, “আমার স্বামী দিনমজুর। এই ছাগল পেলে বাড়িতে কিছু আয় হবে, মেয়ের পড়াশোনার খরচও তুলতে পারব।”
রুদ্রবানা গ্রামের মমতাজ খাতুন বলেন, “সরকার আমাদের কথা ভাবছে—এটাই সবচেয়ে বড় সুখের বিষয়। আমি চেষ্টা করব এই ছাগলগুলো ভালোভাবে পালন করতে।”
আরেক সুফলভোগী জাহানারা বেগম বলেন, “এই ছাগল আমাদের সংসারে নতুন আশার আলো জ্বালাবে।”
প্রধান অতিথি ডা. এ. কে. এম. আসজাদ বলেন, “বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল জাতটি শুধু উন্নত মাংস ও চামড়ার জন্য নয়, এটি গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত্তি। এই ছাগল পালনের মাধ্যমে পরিবারগুলো অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে।”
বিশেষ অতিথি ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “প্রতিটি পরিবারে যদি একজোড়া ছাগল থাকে, তাহলে তা হবে টেকসই আয়ের উৎস। প্রাণিসম্পদ খাতকে এগিয়ে নিতে সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।”
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ভবেন বাইন বলেন, “সরকারের এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে উৎপাদনমুখী করা। আমরা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে সুফলভোগীদের প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।”
সভাপতি ইউএনও রাসেল ইকবাল বলেন, “এই ধরনের প্রকল্প শুধু পশু বিতরণ নয়, বরং একটি পরিবারের ভবিষ্যৎ পরিবর্তনের সোপান। আলফাডাঙ্গার চরাঞ্চলের নারীরা স্বাবলম্বী হয়ে উঠুক—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা সুফলভোগীদের হাতে ছাগল হস্তান্তর করেন।

