বাগেরহাটের ফকিরহাটে টেকসই নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ঘরে ঘরে তৈরি হচ্ছে জৈব সার। ভার্মিকম্পোষ্ট বা কেচোশার বিক্রি করে সাবলম্বি হয়েছে অনেকেই।
এদের মধ্যে টাউন নওয়াপাড়া গ্রামের একজন হতদরিদ্র কৃষক আরোব আলী। তিনি জানান, গত বছর অর্থ সংকটে পড়ে ফসলে ঠিকমতো সারবীষ দিতে পারছিলাম না। বিষয়টি কৃষি কর্মকর্তাকে জানালে তিনি কেঁচোসার উৎপাদনের জন্য ৪টি রিং, ৮শ’ পিচ কেচো ও ছাউনির জন্য টিন কিনে দেয়।বাড়ির দুটি গরুর গোবর ব্যবহার করে জৈবসার উৎপাদনের জন্য অপেক্ষা করতে হয় দুই মাস। প্রতিটি রিং থেকে ২৮-৩০কেজি ভার্মিকম্পোষ্ট সার উৎপাদন করতে খরচ হয় ১শত টাকা। বর্তমানে প্রতিমাসে ২০টি রিংয়ে ৬শ কেজি সার উৎপাদন হচ্ছে। যার বাজার মুল্য প্রায় ১২হাজার টাকা। নিজের উৎপাদিত সার দিয়ে এক একর জমিতে ড্রাগন ফল, গ্রীস্মকালীন টমেটো, ওলকচু ও বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ করা হচ্ছে। পোঁকা-মাকড় দমনে ব্যবহার করা হয় মেহোগনি বীজ ও নিম ছাল। নিজের চাহিদা মিটিয়ে জৈবসার ও উৎপাদিত ফসল বিক্রিকরে সাবলম্বি হয়েছেন বলে দাবী করেন তিনি।
একই এলাকার সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, জৈবসার প্রয়োগ করে গত বছর থেকে আমি প্রায় ১একর জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করছি। অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে তুলনামুলক খরচ আনেক কম। তাই নিজের চাহিদা মিটিয়ে বিক্রয়ের জন্য কেচোঁ সার প্লান্ট তৈরি করেছি। আজিজুল, বাদশাসহ স্থানীয়রা বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে সবজির কাটা অংশ, ভাতের মাড়, ডিমের খোশা, খড়, গোবরসহ ফেলে দেওয়া উপকরন দিয়ে জৈবসার তৈরি করে বাড়ির আঙ্গিনায় নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন দাশ বলেন, ‘বেতাগার অর্গানিক পদ্ধতিতে শাক-সবজির আবাদ দেখে পারস্পরিক শিখনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চাষাবাদ হচ্ছে। এ উপজেলার বানিজ্যিক ভাবে টেকসই পদ্ধতিতে নিরাপদ খাদ্য ও জৈবসার উৎপাদন করে সফলতা দেখিয়েছে অনেকেই। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে তৈরি হচ্ছে জৈবসার। বাড়ির আঙ্গিনায় চাষ হচ্ছে নিরাপদ খাদ্য।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাছরুত মিল্লাত নবধারা কে বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে সারের চাহিদা মিটাতে ভার্মি ফিলেজ স্থাপন করা হয়েছে। কেচোসার বিক্রি করে অনেকেই সাবলম্বি হয়েছেন। উচ্চ মুল্যের ফসল উৎপাদনে জৈবসার ব্যবহারে খরচ অনেক কম তাই চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।