মোঃ জিহাদুল ইসলাম, নড়াইল প্রতিনিধিঃ
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার মুলশ্রী গ্রামে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কৃষিজমিতে আইনের তোয়াক্কা না করে ড্রেজার দিয়ে ফসলি জমি থেকে বেপরোয়াভাবে বালু-মাটি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এতে একদিকে যেমন ফসলি জমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবসহ বসতবাড়ি হুমকিতে পড়েছে। ভুক্তভোগীরা এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
২০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) দুপুরে সরেজমিনে গেলে জানা যায়, মুলশ্রী গ্রামের মৃত কুটিমিয়া শিকদারের ছেলে মাও. নুরুজ্জামান ওরফে নুরো মওলানা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রভাবশালীদের ছত্র ছাঁয়ায় ড্রেজার মালিক চাপাইল গ্রামের গেদন শেখের ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে চুক্তি সাপেে ফসলী জমি থেকে মাটি-বালু উত্তোলন করে আসছে। ভুক্তভোগী একই গ্রামের হামিদ শেখ বলেন, আমি ভ্যান চালিয়ে কৃষি কাজ করে বহু কষ্ট করে সেমিপাকা একটি ঘর করেছি। পাশের জমি থেকে গভীরভাবে বালু-মাটি উত্তোলন করায় আশপাশের জমি ভেঙে পড়ছে। কখন কার ঘর ভেঙে পাশের গর্তে পড়ে সেই আশংকায় দিন কাটে আমার। মুলশ্রী গ্রামের বয়োবৃদ্ধ ভুক্তভোগী দুলু কাজী (৭০) সরোয়ার হুসাইন (৭৫) বলেন, ফসলি জমিতে ড্রেজার বসিয়ে মাটি-বালু কাটায় পাশের জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে এবং আমাদের বসতঘর হুমকির মুখে রয়েছে, এ কথা নুরো মওলানাকে বার বার বলেও কোন কাজ হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মহিলা বলেন, আমরা কষ্ট করে একটি দালানঘর দিয়েছি। নুরো চাচাকে বলেছি দুরে গিয়ে কাটতে কিন্তু উনি কিছু হবেনা বলে আমাদের শান্তনা দিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে বালু কাটার ফলে নীচু জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ড্রেজার মালিক শাহিদুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিমালিকানার জমি থেকে এক হাজার মাটি ২ হাজার টাকায় কিনে বালু উত্তোলন করে ৪/৫ হাজার টাকায় বিক্রি করি। এতে জমির মালিক ও আমরা উভয় পক্ষই লাভবান হই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাও. নুরুজ্জামান ওরফে নুরো মওলানার সাথে তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাকে ড্রেজারের নিকট আসতে বলা হলে তিনি আসতেছি বলে আর আসেন নি এবং পরবর্তীতে তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার ব্যাবহৃত মুঠোফোন (০১৮৬২-৪৮৮৩২৫) নম্বরে ফোন করলে তিনি রিসিভ করেননি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ জহিরুল ইসলাম নবধারা কে বলেন, ফসলি জমি থেকে বালু-মাটি কাটার বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে জনতে পারলাম। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।