বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার আমতলীতে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এমএ ক্লাসের এক ছাত্রীর সঙ্গে গত ১৬ বছর ধরে কুয়েত প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাস প্রেম করেন। ছাত্রীর অভিযোগ পরিবার বেশ কয়েকবার বিয়ের উদ্যোগ নিলেও প্রবাসী প্রেমিক মহিউদ্দিন বিশ্বাসের বাধায় বিয়ে দিতে পারেনি।
জানা গেছে, আমতলী পৌর শহরের একে স্কুল সড়কের এমএ ক্লাসে অধ্যায়নরত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিম আমতলী গ্রামের আব্দুর রহমান বিশ্বাসের ছেলে মহিউদ্দিন বিশ্বাস ১৬ বছর আগে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন।
তখন প্রেমিক মহিউদ্দিন দশম শ্রেণিতে এবং প্রেমিকা একই বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। গত ১৬ বছর ধরে তারা প্রেম করে আসছেন। এর মাঝে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন মহিউদ্দিন এমন অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।
আরও জানা যায়, ২০১৭ সালে প্রেমিক মহিউদ্দিন কুয়েত চলে যান। কুয়েত যাওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকবার ওই ছাত্রীর পরিবার তাকে বিয়ে দিতে উদ্যোগ নিলেও প্রেমিক মহিউদ্দিনের বাধায় বিয়ে পণ্ড হয়। অভিযোগ রয়েছে ওই ছাত্রীর বিয়ের প্রস্তাব আসলেই মহিউদ্দিন জেনে বিয়ে ভেঙে দিতেন। ৮ বছর পর গত ৪ মার্চ তিনি কুয়েত থেকে বাড়িতে আসেন। বাড়িতে আসার পর দুজনের মধ্যে বেশ ভালো সম্পর্ক চলে আসছে। তাদের প্রেমের সম্পর্ক দুই পরিবার বেশ ভালো করেই জানেন। তিনি বেশ কয়েকবার বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন। এখন তাকে তিনি বিয়ে করতে রাজি না।
গতকাল শুক্রবার (২ মে) সকালে প্রেমিক মহিউদ্দিন প্রেমিকাকে মুঠোফোনে জানিয়ে দেয় তাকে বিয়ে করা সম্ভব নয়। এমন কথায় ওইদিন রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী প্রবাসী প্রেমিক মহিউদ্দিনের বাড়িতে অনশনে বসেছেন। এ ঘটনার এলাকার চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রবাসী মহিউদ্দিনের সঙ্গে ওই ছাত্রীর বিয়ের দাবি এলাকাবাসীর। খবর পেয়ে আমতলী থানা পুলিশ প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে অনশনে বসা ছাত্রীর খোঁজ খবর নিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মহিউদ্দিন বিশ্বাস ওই মেয়ের সঙ্গে প্রেম করেছেন তা এলাকার সবাই জানে।
এতো বছর একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করে কেন ওই মেয়েটাকে মহিউদ্দিন বিয়ে করবে না?
শনিবার (৩ মে) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই ছাত্রী কুয়েত প্রবাসী মহিউদ্দিনের বাড়িতে অনশনে বসে আছেন।
বাড়িতে প্রেমিক মহিউদ্দিনে বড় ভাই আল আমিন বিশ্বাস, ছোট ভাই আরিফ বিশ্বাস ও ভাইয়ের বউ আখিনুর আক্তার রয়েছেন। কিন্তু এ ঘটনার পর থেকে প্রেমিক মহিউদ্দিন পলাতক রয়েছেন। অর্ধাহারে অনাহারে ওই ছাত্রী ওই বাড়িতে দিনাতিপাত করছেন।
অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী বলেন, ১৬টি বছর আমার জীবন থেকে মুছে গেছে। আমার পরিবার বেশ কয়েকবার বিয়ের উদ্যোগ নিয়েও ওর কারণে ব্যর্থ হয়েছে। বিয়ের প্রস্তাব আসলেই মহিউদ্দিন আমার বিয়ের প্রস্তাব ভেঙে দিয়েছেন। আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছে। এখন আমাকে বলে বিয়ে করবে না। তাই আমি নিরুপায় হয়ে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেছি।
প্রবাসীর মহিউদ্দিন বিশ্বাসের মা নাসিমা বেগম বলেন, ছেলে মেয়ে প্রেম করেছে। এখন ছেলে বিয়ে করতে চায় না, আমি কি করব? আপনার ছেলে ১৬টি বছর ধরে একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে, বিয়ে দিতে বাধা দিয়েছে কিন্তু এখন কেন বিয়ে করবে না? এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে জানতে প্রবাসী মহিউদ্দিন বিশ্বাসের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।