বাইজীদ সা’দ, টুঙ্গিপাড়াঃ
দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ হওয়ায় শুস্ক মৌসুমে টুঙ্গিপাড়া বাসীর সবচেয়ে দূর্ভোগের কারণ হলো খাল ও নদীর পানির লবণাক্ততা। ভৌগলিক কারণে এ উপজেলায় গভীর নলকূপও স্থাপন করা যায় না। অন্যদিকে অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রণ ও আর্সেনিক থাকায় নিরাপদ পানির অভাবে ৩ টি ইউনিয়নের ১০ ভাগ মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়, টায়ফয়েড সহ পানি বাহিত রোগে ভুগছিলেন দীর্ঘ দিন।
এই সমস্যা সমাধানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর হয়নিরাপদ পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জম্মস্থান গর্বিত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ও কুশলী ইউনিয়নে প্রায় ১৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নতুন নির্মিত ২ টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিবারে পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ শুরু করেছে।
টুঙ্গিপাড়া থেকে শুরু হওয়া এ প্রকল্পে পাটগাতী প্ল্যান্টে ঘন্টায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করে সকাল-বিকাল দুই বেলা ২ হাজার পরিবারকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে এবং সদ্য সমাপ্ত হওয়া কুশলী প্লান্টে ঘণ্টায় ৫০ হাজার লিটার পানি উৎপাদন করে চলতি জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে কুশলী ও বর্ণি ইউনয়নের ১ হাজার ৫০০ পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হবে। পর্যায়ক্রমে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ প্লান্ট স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর।
সুবিধা ভোগী এলাকাবাসীরা জানান, “আমাদের নিরাপদ পানির বড় অভাব ছিল। এজন্য এলাকায় পানিবাহিত রোগব্যাধি লেগেই থাকত। এখন পানির প্লান্টের কারণে আমরা ভালো পানি পাচ্ছি। বাড়িতে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরকার পানি দিচ্ছে। রান্না, গোসল সহ বাড়ির সব কাজ এ পানি দিয়েই করছি। সুপেয় নিরাপদ পানি পেয়ে আমরা খুবই উপকৃত হয়েছি। এতো ভালো পানি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ।”
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রদীপ মজুমদার আমার সংবাদ প্রতিবেদককে বলেন, ”প্রায় ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে নিরাপদ পানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী ও কুশলী ইউনিয়নে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে পাটগাতী, কুশলী ও বর্ণি এই তিন ইউনিয়নের সাড়ে তিন হাজার পরিবার বিশুদ্ধ পানি পাবে। এ প্লান্টে চার স্তরে পানি ফিল্টার করা হয়। এর মাধ্যমে ইতিমধ্যে ২ হাজার পরিবার সুপেয় পানির আওতায় এসেছে। আরো ১ হাজার ৫০০ পরিবার দ্রুত এ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।”
নবধারা/বিএস