নীলকন্ঠ বাকচী, বিশেষ প্রতিনিধি
আসন্ন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই প্রার্থী। টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ এবং তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাঠে রয়েছেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী মাসুদুল হক। গিমাডাঙ্গা গ্রামের প্রার্থী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিএম মাহমুদ হক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে মাসুদ গাজীর অবস্থা ভালো হয়েছে। এখন প্রতিদ্বন্দ্বিতার পালে জোর হাওয়া লেগেছে পুরো উপজেলা জুড়েই।
এদিকে নির্বাচন কমিশনে দাখিলকৃত হলফ নামায় দুই প্রার্থী তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করেছেন।
মোঃ বাবুল শেখ
মোঃ বাবুল শেখের নির্বাচনের প্রার্থী হতে প্রস্তাব করেছেন শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন তার সমর্থনকারী মোঃ আবু দাউদ শেখ। তার জন্ম ৭ জুন ১৯৬৮ খ্রীঃ উপজেলার শ্রীরামকান্দি গ্রামে। মো: বাবুল শেখ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ২০২২ সালে ৩.৫৫ পেয়ে এস এস সি পাশ করেন।
তিনি হলফনামায় জানিয়েছেন তার বাৎসরিক আয় ১ কোটি ১০ লাখ ৯৮ হাজার ৮১৬ টাকা। তার নগদ টাকা রয়েছে ২৫ হাজার। ব্যাংকে জমা রয়েছেন ২৫ লাখ। পরিবারের সংগ্রহে স্বর্ণালংকার রয়েছে ১৫ ভরি। কৃষি জমি নিজ নামে ২০৮ শতাংশ। যৌথ জমি ১৫৩.৭০ শতাংশ। নিজের নামে অকৃষি জমি ৩৪৬ শতাংশ। খুলনা তে স্ত্রী কামরুন নাহার বেগমের নামে ৭ শতাংশ ও পাটগাতী তে স্ত্রীর নামে ১৭ শতাংশ জমি রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।এছাড়া ও বেসিক ব্যাংকে ৯০ লক্ষ, প্রিমিয়ার ব্যাংকে ২ কোটি ইসলামী
৪৬ লক্ষ এবং তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে ১ কোটি টাকার ঋণ রয়েছে।
২০১৯ সালের ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচেনে প্রার্থী হতে তিনি হলফনামায় যে তথ্য দিয়েছিলেনঃ
মোঃ বাবুল শেখ ৮ম শ্রেনী পাশ । তিনি বাড়ী ভাড়া বাবদ বৎসরে ৪ লক্ষ ৮০ হাজার, ব্যবসা করে ৬৫ লক্ষ ২৫ হাজার ১৬ টাকা, অন্যান্য ভাবে ৮ লক্ষ ৪ হাজার, ব্যাংকে জমা ২০ লক্ষ নিজ নামে কৃষি জমি ১৫৩.৭০ শতাংশ, অকৃষি জমি ৩৪৬ শতাংশ, ও নগদ ১০ হাজার টাকা রয়েছে। তবে স্ত্রী কামরুন নাহার বেগমের নামে শিল্প নগরী খুলনায় ৭ শতাংশ ও পাটগাতীতে ১৭ শতাংশ জমি রয়েছে। তার বেসিক ব্যাংক টুঙ্গিপাড়া শাখায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার লোন ছিল।
৫ বছর পর –
দেখা যায় মোঃ বাবুল শেখ ২০২২ সালে এসএসসি পাশ করে তার শিক্ষাগত যোগ্যাতার সনদ অর্জন করেছেন।২০১৯ সালে তিনি ৮ম শ্রেনী পাশ ছিলেন। অন্যদিকে এই ৫ বছরে তার সম্পদের পরিমান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।তবে এই ৫ বছরে তার ঋণের বোঝা ও দ্বিগুন হয়েছে।
এদিকে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা গাজী মাসুদুল হক বাবুল শেখের বিরুদ্ধে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তিনি হলফনামায় যা উল্লেখ করেছেন –
গাজী মাসুদুল হক
গাজী মাসুদুল হকের জন্ম ৫ জুন ১৯৭৯। গিমাডাঙ্গা গ্রামের গাজী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পেশায় একজন ঠিকাদার। দুই সন্তানের জনক গাজী মাসুদুল হক উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ২০২১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪.১৪ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার প্রস্তাব কারী মোঃ জাহাঙ্গীর মোল্লা এবং সমর্থনকারী দুলাল হোসেন গাজী। তিনি ব্যবসা করে বছরে তিন লক্ষ টাকা আয় করেন। এছাড়াও কৃষি খাত থেকে বছরে ১০ হাজার টাকা আয় করেন। তার নগদ টাকা আছে ৫০ হাজার এছাড়াও ব্যাংকে জমা আছে ২ লক্ষ ২৫ হাজার। তার স্ত্রীর কাছে ১১২ ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। তার নিজের নামে কোন জমি জমা নেই্। যৌথ মালিকানায় পরিবারের কৃষি জমি রয়েছে ৭০০ শতাংশ।তার নামে কোন ঋণ নেই।
৫ বছর পর –
দেখা যায় গাজী মাসুদুল হক ২০২১ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে এইচ এস সি পাশ করে তার শিক্ষাগত যোগ্যাতা বাড়িয়ে নিয়েছেন।অন্যদিকে এই ৫ বছরে তার বার্ষিক আয় ১ লক্ষ ৮৫ হাজার টাকা হতে ৩ লক্ষ টাকা হয়েছে। ৫ বছর পর কৃষিখাত হতে ১০ হাজার টাকা বার্ষিক আয় বেড়েছে।৫ বছর পর ৭৫ হাজার টাকা নগদে জমা হয়েছে। এই ৫ বছরে তার ঋণের পরিমান আগের মতোই আছে একটাকা ও তার ঋণ নেই।তবে এই ৫ বছরে তার স্ত্রীর অধিকারে ১১২ ভরি স্বর্ণালংকার যোগ হয়েছে।যার মুল্য ১ কোটি টাকার উপরে।