রাসেল আহমেদ,খুলনা প্রতিনিধি
খুলনার একটি এজেন্ট শাখার ৫০ গ্রাহকের প্রায় ৯৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষ পর্যায়ের নয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় খুলনার সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম।
এর এক দিন আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বাদী হয়ে দুদকের খুলনা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মো. শিরিন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন) মো. সাহাদাৎ হোসেন, ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন কমপ্লায়েন্স বিভাগের প্রধান ফরহাদ মাহমুদ, এজেন্ট ব্যাংকিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আহাম্মেদ আসলাম আল ফেরদৌস, খুলনা রিজিওনাল অফিসের সাবেক রিজিওনাল হেড এ এইচ এম কামরুজ্জামান, সাবেক এরিয়া ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম, আউটলেট রিলেশন অফিসার পলি খাতুন, আড়ংঘাটা বাজারের ‘মুন মানহা’ এজেন্ট শাখার মালিক এস এম সোহেল মাহমুদ ও একই শাখার টেলার আবদুল হান্নানকে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক রকেট অ্যান্ড এজেন্ট ব্যাংকিং অফিস খুলনার আওতাধীন মুন মানহা এজেন্ট শাখায় বিভিন্ন সময় ৫০ জন গ্রাহকের কাছ থেকে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা জমা নেওয়া হয়। এই অর্থ থেকে ৯৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা গ্রাহকদের ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করেন সংশ্লিষ্টরা। ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর অনুমোদিত এজেন্ট হিসেবে আড়ংঘাটা বাজারে শাখাটির কার্যক্রম শুরু হলেও ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করে শাখাটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে শাখার এজেন্ট সোহেল মাহমুদসহ অন্যরা আত্মগোপনে চলে যান।
দুদকের সহকারী পরিচালক রকিবুল ইসলাম বলেন, তদন্তে দেখা যায়—অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় জড়িত তিনজন ছাড়াও খুলনার রিজিওনাল অফিসের তদারকি ও মনিটরিং ছিল অত্যন্ত দুর্বল। তিনি বলেন, “ব্যাংকের নিজস্ব তদন্তেও দায়ী কর্মকর্তাদের শনাক্ত বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অথচ ব্যাংকের নীতিমালা-২০২২ অনুযায়ী এজেন্টের মাধ্যমে কোনো অনিয়ম বা প্রতারণা হলে গ্রাহকের জমা অর্থ ফেরত দেওয়ার দায় ব্যাংকেরই।”
তিনি আরও জানান, প্রতারিত গরিব গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ব্যাংক দীর্ঘদিন গড়িমসি করেছে। পরে প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

